ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২২টি ই-মেইল প্রকাশই করা হবে না ॥ রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে

গোপন তথ্যে ভরা হিলারির সার্ভার

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

গোপন তথ্যে ভরা হিলারির সার্ভার

হিলারি ক্লিনটন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তার ব্যক্তিগত কম্পিউটার সার্ভারের মধ্য দিয়ে ‘সর্বাপেক্ষা গোপনীয়’ তথ্য পাঠানো হয়েছিল। ৩৭ পৃষ্ঠার ২২টি ই-মেইল পাঠানো ওই সব তথ্য এতই গোপনীয় যে, ই-মেইলগুলো প্রকাশ করা হবে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে ভোটাররা তাদের প্রথম ভোটদানের মাত্র দিন কয়েক আগে পররাষ্ট্র দফতর শুক্রবার প্রথমবারের মতো এ কথা জানালো। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইন ও এএফপির। হিলারি এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যে বিনিময় করা ১৮টি ই-মেইলও প্রকাশ করা হবে না বলে ওই দফতর জানায়। দফতর এর কারণ হিসেবে প্রেসিডেন্টের পাঠানো চিঠিগুলো ভবিষ্যতে প্রকাশের জন্য সংরক্ষণ করার দীর্ঘদিনের রীতির কথা উল্লেখ করে। দফতরের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, ওই সব বিনিময় করা ই-মেইলে গোপনীয় তথ্য ছিল না। প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের লড়াইয়ের সূচনায় আইওয়া অঙ্গরাজ্যের দলীয় ককাস ভোটাভুটির তিন দিন আগে সর্বাপেক্ষা গোপনীয় ই-মেইলগুলো সম্পর্কে ওই তথ্য জানানো হলো। এ লড়াইয়ে হিলারিই অগ্রগামী প্রার্থী। নবেম্বরে নির্বাচন দিবসে পৌঁছানোর দীর্ঘপথে এই প্রথম লোকজন ভোট দেবেন। ওই তথ্য হিলারির বাসভবনে রাখা উন্মুক্ত কম্পিউটার সার্ভারে গোপনীয় ই-মেইলগুলো গ্রহণ করা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক নিশ্চিতভাবে উস্কে দেবে। এগুলো হিলারির ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে তিনি কিভাবে গোপনীয় তথ্য পরিচালনা করেছিলেন তা নিয়ে তার প্রেসিডেন্সিয়াল প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমালোচনা বিশ্বাসযোগ্যতা যোগায়। রুটিনমাফিক কাজের জন্য ব্যবহৃত উন্মুক্ত নেটওয়ার্কে বা ব্যক্তিগত সার্ভারে গোপনীয় তথ্য নিয়ে আলোচনা করা কর্মকর্তাদের জন্য আইনবিরুদ্ধ। পররাষ্ট্র দফতর জানায়, তারা দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুরোধে ই-মেইলগুলোকে গোপনীয় বলে উন্নীত করেছে। কারবি জানান, সেগুলো হিলারির কম্পিউটার সার্ভারের মধ্য দিয়ে পাঠানোর সময় কোনটিকেই কোন পর্যায়ের গোপনীয় বলে চিহ্নিত করা হয়নি। হিলারির প্রচার শিবির ওই ঘোষণার প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তার ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনার গুরুতর ক্ষতিসাধন করছে এমন এক বড় কেলেঙ্কারি দূর করতে ই-মেইলগুলোর পূর্ণ বিবরণ প্রকাশের দাবি জানায় ওই শিবির। এফবিআইও হিলালির প্রাইভেট ই-মেইল সার্ভার ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত করছে। সর্বশেষ ঘটনাপ্রবাহ হিলারির ওপর নতুন করে আক্রমণ চালাতে প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান প্রার্থীদের উৎসাহিত করেছে। ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিও আইওয়াতে প্রচারাভিযানকালে বলেন, ওই তথ্য ফাঁস হিলারিকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য করে তুলেছে। তিনি বলেন, হিলারি যা করেছিলেন, যদি আমার কোন স্টাফ তা করতেন, তবে কি ঘটত তা জানেন? তাকে বরখাস্ত করা হতো, তাকে বিচারে সোপর্দ করা হতো। রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান রিন্স প্রিবাস বলেন, হিলারিকে যে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা দিয়ে বিশ্বাস করা যায় না, সর্বশেষ ঘটনায় হিলারি নিজেই তা নিয়ে সন্দেহ দূর করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, হিলারির কোন ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক চেষ্টাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তবে হিলারির ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডারস ই-মেইলগুলোকে যাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো না হয়, সেজন্য সেগুলো পর্যালোচনার আইনগত প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানান। হিলারির উত্তরাধিকারী জন কেরি ওই ব্যাপক কেলেঙ্কারিতে জড়িত হতে এবং ই-মেইল পাঠাতে কোন ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকির সৃষ্টি করেছিল কি-না, সে প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেন।
×