ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মানববন্ধন

চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদে নক্সা অনুমোদন ৯ বছর বন্ধ

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদে নক্সা অনুমোদন ৯ বছর বন্ধ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদে প্রকল্পের দোহাই দিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) আবাসিক স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদন বন্ধ রেখেছে। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর ধরে নক্সা অনুমোদন না পেয়ে এলাকার প্রায় ৫ হাজার পরিবার অবৈধ স্থাপনা গড়তে বাধ্য হচ্ছে। চউকের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ওই এলাকার অধিবাসীদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার ফতেয়াবাদ কলেজ সড়ক এলাকায় মানববন্ধন করাসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে আতঙ্কগ্রস্ত ৫ হাজার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়াও চউক এ প্রকল্পের অনুমোদন পায়নি দীর্ঘ ৯ বছরেও। অথচ প্রকল্পের বাজেট প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে অনুমোদনের জন্য। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে প্রকল্পই অনুমোদন পায়নি সেখানে বাজেট অনুমোদন নিয়ে চউক কোন ধরনের পাঁয়তারা করছে। চউকের এ প্রকল্প অনুমোদন পেলে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় সাড়ে ৫ হাজার একর জায়গা চউকের আওতায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চউকের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হলেও তা মৌজা রেট অনুযায়ী জমির মালিকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে প্রায় ৫ হাজার পরিবারে ১ লাখ লোকের বসবাস। হতদরিদ্র থেকে শুরু করে বিত্তশালী পর্যন্ত সকলেই এখন রয়েছে ভূমি হারানোর আতঙ্কে। ২০০৭ সালে চউকের পক্ষ থেকে ‘ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন’ নামের আবাসিক প্রকল্পের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে ভূমির পরিমাণ প্রথম দফায় ছিল প্রায় ৪ হাজার ৭শ’ একর। দ্বিতীয় দফায় এ ভূমি ৭ হাজার একরে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে চউক। প্রথম পর্যায়ে ৩শ’ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব রয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে। ২০১৪ সালে আড়াই হাজার কোটি টাকা ডেভেলপমেন্ট প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্টের (ডিপিপি) আওতায় বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। হাটহাজারী থানাধীন অথচ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সর্বপ্রথম ওয়ার্ড (১নং) এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চউকের প্রস্তাবিত ভূমির প্রায় ৮০ শতাংশই ব্যক্তি মালিকানার। পাহাড় থেকে শুরু করে সমতল ভূমি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার একর জায়গা ৫ হাজার পরিবারের মালিকানায় রয়েছে। প্রস্তাবিত ভূমির পশ্চিমে পাহাড়, পূর্বে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক। দক্ষিণে চট্টগ্রাম সেনানিবাস ও উত্তরে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২শ’ একর জমির উপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়কের বটতলা বাজারের সীমানা থেকে শুরু করে প্রায় ৭ হাজার একর জায়গা প্রস্তাবিত নিউ টাউনের জন্য অধিগ্রহণ করতে চায় চউক। অভিযোগ রয়েছে, আরএস, পিএস ও বিএস জরিপ অনুযায়ী এলাকাবাসী প্রতিবছরের চৈত্র-বৈশাখে খাজনা পরিশোধ করেন। গত ২০০৭ সাল থেকে চউকে এলাকাবাসীর অনেকেই ভূমি উন্নয়নের জন্য স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি চেয়ে নক্সা অনুমোদনের আবেদন করা হয়। কিন্তু চউক তাতে প্রকল্পের দোহাই দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। বন্ধ রেখেছে ভূমি উন্নয়নে স্থাপনা নির্মাণে নক্সা অনুমোদন।
×