ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাগমারা কাদিয়ানি মসজিদে আত্মঘাতী হামলা

তদন্ত অন্ধকারে

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

তদন্ত অন্ধকারে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সৈয়দপুর মচমইল চকপাড়া আহমদিয়া (কাদিয়ানি) জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার তদন্ত থেমে গেছে। ঘটনার পর প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তদন্তের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। আত্মঘাতী হামলায় নিহত যুবকের পরিচয়ও মেলেনি এখনও। ফলে অধরায় রয়ে গেল এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের খোঁজ। ঘটনার পর থেকে বাগমারা থানা পুলিশ এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দুটি টিম তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে। তবে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, হামলার পরিকল্পনাকারী সংগঠন, পরিকল্পনাস্থল, বোমা বিস্ফোরণে আত্মহননকারীর পরিচয়, হামলায় অংশ নেয়া হামলাকারীর সংখ্যাসহ বিভিন্ন ইস্যু চিহ্নিত করে তদন্ত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত হামলাকারীর পরিচয় এবং কোন সংগঠন এর সঙ্গে যুক্ত, তা প্রকাশ না হওয়ায় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিদায়ী বছরের ২৫ ডিসেম্বর জুমার নামাজ চলাকালে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কাদিয়ানি মসজিদটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। হামলায় বোমা বহনকারী যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন ১০ জন মুসল্লি। ঘটনার পর প্রথমে নিহত যুবকের পরিচয় হিসেবে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী বলে প্রচার হলেও অনুসন্ধান করেও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রাজশাহীর একজন কর্মকর্তা দাবি করেন, নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্তের ব্যাপারে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া এ হামলায় আরও কয়েকজন জড়িত ছিল, সে ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। কেননা, এ ধরনের হামলা কেউ একা ঘটাতে পারে না। এর পেছনে অবশ্যই আরও কয়েকজনের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। তবে হামলাটি কোন ব্যক্তি বিশেষ নয়, এটি পরিকল্পিত সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে মসজিদে হামলার পর স্থানীয় মুসল্লিরা বলেছিলেন, হামলার সময় মসজিদের অদূরেই একজন যুবক অবস্থান করছিল। বোমা বিস্ফোরণের পরেই ওই যুবক দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর ওই যুবক কিছুটা দূরে অপেক্ষমাণ আরেক যুবকের মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। এর ফলে হামলাকারীরা সংখ্যায় তিনজন ছিল, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্তকারীরা এ বিষয়টিকে আমলে নিয়ে তা তদন্ত করে দেখছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানালেও ঘটনার দুই সপ্তাহেও কোন কূল-কিনারা পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদিকে নিহত হামলাকারী সুসংগঠিত জঙ্গী সংগঠনের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীর কোমরে সুইসাইড বেল্ট বাঁধা ছিল। হামলায় নিহত যুবক প্রশিক্ষিত ছিল। সুসংগঠিত কোন জঙ্গী সংগঠনের সদস্য। তবে নিহত যুবক কোন সংগঠনের সদস্য তাও শনাক্ত করা যায়নি। হামলার ঘটনার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত দুই যুবককে আসামি করে মামলা দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত তাদের নির্দিষ্ট পরিচয় সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ। বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, তদন্তের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু বিষয় শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর কাছে মোবাইল ফোন বা মানিব্যাগ না পাওয়ায় তার পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে আমরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
×