ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ডাইনি, রক্তপিপাসু হায়েনা- কথাগুলো খালেদার ক্ষেত্রেই খাটে ॥ হাছান মাহমুদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

ডাইনি, রক্তপিপাসু হায়েনা- কথাগুলো খালেদার ক্ষেত্রেই খাটে ॥ হাছান মাহমুদ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অগণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ‘আওয়ামী লীগ ডাইনি, বাঘিনী, রক্তপিপাসু’- খালেদা জিয়ার এমন মন্তব্যের কড়া জবাবও দিয়েছে দলটি। পাল্টা জবাবে আওয়ামী লীগ বলেছে, প্রকৃতপক্ষে ডাইনি, রক্তপিপাসু ও হায়েনা- এ কথাগুলো খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তার (খালেদা জিয়া) হাতে শুধু পোড়া মানুষের গন্ধই না, রক্তের দাগ লেগে আছে। তার তিন মাসের নাশকতা, ধ্বংসযজ্ঞ ও মানুষ হত্যার জবাব দেশের জনগণ পৌর নির্বাচনেই দিয়েছে। শনিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সম্প্রতি পৌর নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়ার বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৩-১৪ সালে খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও, তা-ব ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেশের জনগণ তার এ ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি কয়েক শ’ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, নির্বিচারে গাছ নিধন করেছেন, পশুপাখি হত্যা করেছেন। নারী-শিশু, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা কেউই তাদের সহিংস থেকে রেহাই পাননি। অবশ্য এসব তা-বের জবাবই পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছে। ভোটাররা ব্যালটে জবাব দিয়েছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার এই সহিংস রাজনীতির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দল থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন। তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনের নামে খালেদা জিয়া শুধু মিথ্যাচারই করেননি, আপত্তিকর বক্তব্যও দিয়েছেন। শীঘ্রই সরকারের পতন হবে- খালেদা জিয়ার এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, সরকার গঠিত হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে আরেকটি নির্বাচন হবে। এর আগে যে সরকার পতনের কথা খালেদা জিয়া বলছেন- তার মানে তিনি অগণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের পত?ন ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া কেবল নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়েই সম্ভব। হাছান মাহমুদ বলেন, জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন নির্বাচন বলতে জনগণ ‘১০টি হোন্ডা ২০টি গু-া- নির্বাচন ঠা-া’ বুঝত। খালেদা জিয়া সম্ভবত সে ধরনের নির্বাচন চেয়েছিলেন। ছিয়ানব্বই সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি উনি (খালেদা জিয়া) ভোটারবিহীন যে নির্বাচন করেছিলেন, তিনি তার বক্তব্যে সে ধরনের নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। অযথা মিথ্যাচার থেকে বিরত এবং ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অতীতের অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনের চেয়ে এবারের পৌরসভা নির্বাচন অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গের পৌরসভা নির্বাচনের চেয়েও আমাদের দেশের পৌরসভা নির্বাচন অনেক বেশি স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। খালেদা জিয়া বিএনপির পতন ঘটিয়েছেন- সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেছেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সরকারের পতন করতে গিয়ে নিজের দলেরই পতন করে ফেলেছেন। এর উদাহরণ হিসেবে তিনি সদ্যসমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির শোচনীয় পরাজয়ের চিত্র তুলে ধরেন। শনিবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। হঠকারী রাজনীতির পথ পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিক পথে রাজনীতি করার জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের আর কোন পথ নেই। বিশ্বের প্রতিটি দেশের রাজনীতিতে তা প্রমাণিত সত্য। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ইস্কান্দর মির্জা শামীম, কৃষক লীগ নেতা নাজির মিয়া, সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা হারুন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।
×