ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘে সবুজ জলবায়ু তহবিলের অর্থ অনুদান চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জাতিসংঘে সবুজ জলবায়ু তহবিলের অর্থ অনুদান চায় বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘের সবুজ জলবায়ু তহবিলের অর্থ অনুদান হিসেবে চায় বাংলাদেশ। জলবায়ুবিষয়ক এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, প্যারিসে বাংলাদেশের উচিত গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ডের অর্থ কোন শর্ত ছাড়াই অনুদান হিসেবে প্রদানের দাবিতে সোচ্চার থাকা। সেই সঙ্গে বিদ্যমান এলডিসি ফান্ড যাতে বন্ধ না হয় সে বিষয়ে ভূমিকা রাখা। আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোকে কোন ‘ওয়াকওভার’ না দিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ক্লাইমেট পলিটিক্স: রোড টু প্যারিস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সরকারের প্রতি এসব পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ), ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) এবং নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ (এনসিসিবি) এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে বন ও পরিবেশবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এটাই শেষ সুযোগ জলবায়ু উদ্বা¯ু‘ ইস্যুকে প্যারিস চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশেও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। ফলে মানুষ গৃহহীন হচ্ছে। তাই জলবায়ু উদ্বাস্তু বিষয়টি এখন বাস্তবতা। এই সুযোগে জাতিসংঘের ‘উদ্বাস্তু’ সংজ্ঞা পরিবর্তন করে ‘জলবায়ু উদ্বাস্তু’কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কথা বলতে হবে। গ্রীন হাউস গ্যাস না কমানো হলে বাংলাদেশের মতো অনেক দেশই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করতে পারবে না। উন্নত দেশগুলো যে হারে কার্বন কমানোর কথা বলছে, তাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা দুই ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে চার ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে। বৈঠকে কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমল বলেন, কক্সবাজার এলাকায় এক শ’ বছর আগে যেখানে একফুট পানি ছিল, সে স্থান এখন দশ থেকে পনেরো ফুট পানির নিচে। কক্সবাজার এখন বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে। আমাদের এই ক্ষতির বিষয়টি প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরতে হবে। বৈঠকে ইক্যুইটি বিডির সমন্বয়কারী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আসন্ন প্যারিস সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান ও কর্ম পরিকল্পা কি, সেটা সবাইকে জানাতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নজর দেয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আবদুল মতিন বলেন, জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোকে ওয়াকওভার না দিয়ে বাংলাদেশের উচিত হবে শক্তিশালী ভূমিকা নেয়া। সাধারণ জনগণের মতামতের প্রতিফলন না ঘটলে সম্মেলনই ব্যর্থ হবে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইডিইবি সভাপতি এ কে এম এ হামিদ। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পার্টিসিপেশনারি রিসার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) নির্বাহী পরিচালক এম শামসুদ্দোহা এবং নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান বিজয়। আরও বক্তব্য রাখেন বিসিজেএফের সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মীর্জা শওকত আলী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান, বিসিজেএফের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন।
×