ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

১৬ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে শাখা খোলে জেএমবি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৪ জুলাই ২০১৫

১৬ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে শাখা খোলে জেএমবি

বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের অন্তত ১৫ বছর আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শাখা খোলে বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন জামা‘আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। গত বছরের অক্টোবরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। ২০০৫-এ বাংলাদেশের নাশকতায় ‘ব্যাক অফিস’ হিসেবে কাজ করেছে জেএমবির এই শাখাটি। খাগড়াগড় তদন্তে নেমে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এই তথ্য জানতে পেরেছে। তদন্তে এনআইএ জেনেছে যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে গোটা বাংলাদেশ কাঁপিয়ে ২০০৫-এর আগস্টে জেএমবি যে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয় তাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে পশ্চিমবঙ্গের তিনজন বাসিন্দা। এমনকি জেএমবির পরিকল্পনায় সে সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ঢোকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। বাংলাদেশের নাশকতায় সরাসরি জড়িত হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের যে তিন জনের নাম উঠে আসছে, তাদের মধ্যে এক জন খাগড়াগড়কা-ে অভিযুক্ত ইব্রাহিম শেখ ওরফে লাল মোহাম্মদ ওরফে লাল্টু। এপ্রিলে ঝাড়খ-ের পাকুড় থেকে ধরা পড়ে এই জেএমবি সদস্য। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে। বাকি দুই জেএমবি সদস্যের এক জন বর্ধমান এবং অন্য জন মুর্শিদাবাদেরই লালগোলার বাসিন্দা। নাম জানার পর তাদের খোঁজখবর শুরু করেছে এনআইএ। ওই দু’জনের নাম অবশ্য এখনও খাগড়াগড়কাণ্ডে পাননি গোয়েন্দারা। ইব্রাহিম শেখ এখন জেলে। জঙ্গী চক্রের শিকড় সন্ধানে তাকে ফের জেরা করতে আদালতে আবেদন জানাবেন গোয়েন্দারা। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সকালে আধা ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলার ৩০০ জায়গায় বিস্ফোরণ হয়। ভারতের গোয়েন্দারা জেনেছেন, ওই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের কয়েক দিন আগে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুরের খোদারামপুরে জেএমবির একটি গোপন আস্তানা থেকে বনস্পতির দু’টি বড় পাত্র নিয়ে গিয়েছিল জেএমবির দুই সমর্থক আরিফ ও মাহমুদ। ওই দু’টি পাত্রে ছিল বিস্ফোরক। অন্যভাবেও বিপুল বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর যায় সীমান্তের ওপারে। এই সূত্রেই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ১৬ বছর আগেই পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গী নেটওয়ার্ক গড়ে জেএমবি। গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ থেকে জেএমবির সদস্য মাহমুদ ও হাতকাটা নাসিরুল্লাহ ওরফে সোহেল মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুরে এসে এই রাজ্যে তাদের সংগঠনের গোড়াপত্তন করে। নাসিরুল্লাহ খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এবং এখনও ফেরার। জেএমবি এই রাজ্যে পুরোদস্তুর কাজ শুরু করে ২০০২ সালে। আর সে বছরই নবগ্রামের এক বাসিন্দাকে সংগঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশের রাজশাহীতে জেএমবির শিবিরে নিয়ে গিয়ে তাকে জঙ্গী প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছিল।
×