স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার রোধে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ জন্য বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। রবিবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশের পোশাক খাত উন্নয়নের প্রেক্ষিতে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে সহায়ক হবে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে এক সৌজন্য বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। এ সময় শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার, মার্কিন দূতাবাসের লেবার এ্যাটাশেসহ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ সহযোগিতা চাইলে যুক্তরাষ্ট্র তা দেবে। মানবপাচার একটা বড় ট্র্যাজেডি। আশা করি সরকার দ্রুতই পদক্ষেপ নেবে। আর বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে।
বার্নিকাট আরও বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় শ্রম অধিকার, ট্রেড ইউনিয়ন, কল-কারখানায় কর্মপরিবেশ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের জানান, শ্রম অধিকার, ট্রেড ইউনিয়ন, বিল্ডিং সেফটি, জিএসপি সুবিধা- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত এসব বিষয়ে সরকারের কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের ট্রেনিংয়ে তাকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি আসবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। জিএসপি সুবিধার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীকে বার্নিকাট জানিয়েছেন, শ্রম অধিকার পূরণের বিষয়ে এখনও কিছুটা ঘাটতি আছে। সেজন্য জিএসপি পেতে সমস্যা হচ্ছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী জানান, মানবপাচার রোধ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। মানবপাচার আমাদের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তবে আমার জানা মতে, মানবপাচার রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকর ও যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবপাচারে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রানা প্লাজার ঘটনা তদন্তে শ্রম আইন, পোশাক শিল্প-কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন, পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শনে পরিদর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের ৪০ দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে শ্রম আইনের অধীনে শ্রমবিধি প্রণয়ন সম্পন্ন হবে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানান, যেসব কারখানায় শ্রমিকরা শর্তপূরণ করতে পারছেন, সেখানে ট্রেড ইউনিয়নের সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, জিএসপি সুবিধা বাতিল করায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এ সময় বাংলাদেশ যাতে জিএসপি সুবিধা পায়, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান তিনি। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, জিএসপি তার হাতে নয়। বাংলাদেশ পোশাক খাতের উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছে, যা সন্তোষজনক। এটা জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে সহায়ক হবে বলেও জানান।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: