ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

চসিক নির্বাচন

পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র নিতে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের অপচেষ্টা

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র  নিতে ভুঁইফোড়  প্রতিষ্ঠানের অপচেষ্টা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক নিয়োগে নির্বাচন বিধিমালা মানা হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা ২০১০-এর আওতায় (সংশোধিত ২০১৩/নবেম্বর) স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ ও মোতায়েনের কথা থাকলেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অফিস সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই করছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে পর্যবেক্ষকের নামে যারা পরিচয়পত্র গ্রহণ করছে তাদের মধ্যে অসাধুরা নির্বাচনকে কলুষিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, পর্যবেক্ষক নিয়োগে ইলেকশন অবজারবেশন (ইও) ফরম পূরণের কথা থাকলেও তা না মেনে বিভিন্ন সংস্থার নামে ভুঁইফোড় পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র গ্রহণ করছে। চট্টগ্রামে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষক বলতে কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যাকে নির্বাচন কমিশন অনুমোদন প্রদান করবে। কোন ব্যক্তি কর্তৃক এ অধ্যাদেশের অধীন কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষকের জন্য লিখিত অনুমতির কথা রয়েছে। ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী যে কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কমিশন বা কমিশন হতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে লিখিত অনুমতিপত্র কোন ব্যক্তি বা পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীকে প্রদান করা যাবে। স্থানীয় পর্যবেক্ষক আবেদন ফরম পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীকে পর্যবেক্ষকের অঙ্গীকার নামায়ও স্বাক্ষর করতে হয়। আরও জানা গেছে, অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পর্যবেক্ষক নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবেন। কোন রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর কর্মী নয় বা নিজেও প্রার্থী নয় এমন তথ্য উল্লেখ করে ইলেকশন অবজারবেশন ফরম ও অঙ্গীকারনামা পূরণ করতে হবে। এছাড়াও নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকা- পর্যবেক্ষণের সময় কোন প্রার্থী, রাজনৈতিক দল এবং কোন কমিটির আনুকূল্য প্রদর্শন হতে বিরত থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, কঠোরভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়টিও অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করতে হবে। এছাড়াও প্রার্থী বা তাদের এজেন্টদের নিকট হতে কোন ধরনের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে না। এক্ষেত্রে হুমকি প্রত্যাখ্যান করে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পর্যবেক্ষককে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান নিয়েই পর্যবেক্ষণ কার্য শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন হলে ঐ পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে আইনত দ-নীয় অপরাধ মেনে নেয়ার অঙ্গীকারও করতে হয়। এক্ষেত্রে অঙ্গীকারনামায় আবেদনকারী তার নাম জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরও সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা উল্লেখ করতে হয়। অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রামে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যারা পর্যবেক্ষক হিসেবে বিবেচিত হতে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে সংস্থার পক্ষ থেকে আবেদনপত্র দাখিল করেছেন তা যাচাই বাছাই হচ্ছে না। ঢালাওভাবে পর্যবেক্ষণ করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এমনকি কিছু অননুমোদিত অনলাইন মিডিয়া, সার্কুলেশনবিহীন সংবাদপত্র ও ভুঁইফোড় সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমতি দেয়ায় নির্বাচন ব্যবস্থা কলুষিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রামস্থ আঞ্চলিক অফিসের রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেনের সঙ্গে কয়েদফায় মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে নির্বাচন কমিশনের এ দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এমনকি বিভিন্ন সংস্থার বরাত দিয়ে ৫ শতাধিক পরিচয়পত্রের আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০ ভাগ আবেদনপত্রের বিপরীতে পরিচয়পত্র ইস্যু করা হয়েছে। তবে পর্যবেক্ষণ পরিচয়পত্র ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের যে বিধিমালা রয়েছে তা মানা হচ্ছে না ঠিকই কিন্তু চাপের মুখে পর্যবেক্ষণ পরিচয়পত্র প্রদান করতে হচ্ছে।
×