ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বন্ধের দিন উধাও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ৩১ মার্চ ২০২৪

বন্ধের দিন উধাও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন

পরিত্যক্ত ভবন

জামালপুরে বন্ধের দিনে উধাও হয়ে গেছে কেন্দুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবন। কে বা কারা এই ভবন ভেঙ্গে নিয়ে গেছে তা জানে না কেউই। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে ভবনটি ভাঙ্গা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

জামালপুর সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন জনবহুল জায়গা থেকে শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত একটি ভবন। আর কে এই ভবন ভেঙ্গেছে তা জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা। 

খোঁজ  নিয়ে জানা গেছে, শত বছর বয়সী ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থেও তিন কক্ষ বিশিষ্ট এই ভবনটি ব্যবহৃত হতো দাতব্য চিকিৎসালয় হিসেবে। 

রবিবার  দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান গেটের পরে হাতের বাম ও ডান পাশে পড়ে রয়েছে কিছু ইটসহ ভবনের ভাঙ্গা কিছু অংশ। 

এছাড়াও কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাঙ্গণে দেখা গেছে সেই ভবনের কিছু রড ও একটি ভেকু গাড়ি। কে বা কারা কি কারণে এই ভবন ভেঙ্গেছে এমন প্রশ্নের উত্তর নেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীদের কাছে। তবে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন রায় বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। এরপর শনিবার আবারো অফিসে গিয়ে দেখি যে পরিত্যক্ত ভবনটি কে বা কারা ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। পরে আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই ও জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।’ 

স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে বসবাসকারী খালেদা বেগম বলেন, আমরা হাসপাতালের পাশে থাকি। শুক্রবার চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে বেলা ১১টার দিকে ভবন ভাঙ্গা শুরু করে। রাত একটা পর্যন্ত ভবন ভাঙ্গার কাজ চলে। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করলে আমার ছেলেকে আরো মারধর করতে আসছিলো তারা। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহিন বলেন, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠ সহকারী সাজু বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে ভবনটি ভাঙ্গার কাজ করে। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলেও তারা তা দেখায়নি। ভবন ভাঙ্গার বিষয়ে কেন্দুয়া বাজার এলাকার শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ভবনটি ভাঙ্গাতে আমরা সবাই খুশি। পরিত্যক্ত ভবন ছিলো। শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এটি ভাঙ্গা হয়। চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে লোকজন এসে ভবনটি ভেঙে ফেলেন। 

অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, এই ভবনটি এই এলাকার মাদক ব্যবসার একটি কারখানা ছিলো। এই ভবনটি সরানোর জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সদর এমপি মহোদয়কে কয়েকবার অবগত করেছিলাম। কে এই ভবন ভেঙ্গেছে তা আমরা জানি না। ভবন ভাঙ্গার পর আমি ভবনের ভাঙ্গা চূড়ার অবশিষ্ট অংশটুকুর নিরাপত্তার জন্য বাজারের নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করেছি। আমার পরিষদের সামনে হলেও আমি জানি না কে ভেঙ্গেছে। 

জামালপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সরকার বলেন, রবিবার দুপুরের দিকে আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আর এই বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। আর ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকুর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

এসব বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জনকণ্ঠকে বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। 

 

 

এস

×