ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল রোগীশূন্য

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ এপ্রিল ২০২০

করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল রোগীশূন্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ দিনরাত যেখানে শত শত রোগীর উপস্থিতি ছিল। এখানে করোনা আসার পর আতঙ্কে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে অনেকটা নিরবতা। আর কোন রোগী আসলেও চিকিৎসক সংকটে থাকায় তাকে ঢাকা-সিলেট রেফার করা হয়। হাসপাতাল গেটে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সগুলোও কোন রোগী আসলেই তাদের ডাক পড়বে সেই আশায় হাসপাতালে ঘুর ঘুর করে। প্রায় এক মাস যাবৎ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ও প্রধান সহকারী না থাকায় এই দুঃসময়ে হাসপাতালটি হয়ে পড়েছে অভিভাবকশূন্য। এক মাস যাবৎ বেতন পাচ্ছেন না কর্মচারীরা। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৩০টি বেড থাকলেও অন্য সময় সেখানে একশর বেশী রোগী ভর্তি থাকত। এখানে বর্তমানে অনেকটাই রোগী শূন্য। তবে পাশের গাইনী ওয়ার্ডে তুলনামূলকভাবে রোগী ছিল বেশি। কিন্তু সেই ওয়ার্ডে ফাঁকা স্থান থাকলেও কেউই মানেননি সামাজিক দুরত্বের নিয়ম। ফুল বানু নামে এক রোগী জানান, আমাদেরকে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। জরুরী বিভাগে গিয়ে জানা যায়, সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ছিলেন। কিন্তু তার দেখা মেলেনি। বেশ কয়েকজন রোগী আসলে তাদেরকে চিকিৎসা দেন ইন্টার্ন ডিপ্লোমা চিকিৎসকরা। তারাও সেখানে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলছে না। হাসপাতালের নতুন নির্মিত ২৫০ শয্যা ভবনের ৮ম তলায় করা হয়েছে করোনা রোগীর জন্য আইসোলেশন সেন্টার। ৫০টি আসন রয়েছে। সেখানে ২ জন আছেন চিকিৎসাধীন। এর আগে আরও ১২ জন ছিলেন সেখানে। করোনার ভয়ে ওই ভবনে লোকজনের যাতায়াত চোখে পড়েনি। হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মিঠুন রায় জানান, এক মাস হয়েছে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রথীন্দ্র দেব ও প্রধান সহকারী মিজানুর রহমানকে বদলী করা হয়েছে। ডাঃ আশরাফ উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও তাকে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। ফলে কোন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও কর্মচারীরা গত মাসের বেতন পাননি। রোগী কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে শহরের কোন রোগী আসে না। বেশীরভাগ রোগী আসে গ্রাম থেকে। গাড়ি না থাকায় আসা কষ্টদায়ক। আর ৮টা থেকে ১২টার মাঝে দুরের রোগী আসতে পারে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক এবং প্রধান সহকারীকে এভাবে বদলী করা উচিত হয়নি। আর আমরা বেতন না পেয়ে কষ্টে আছি। কাজ করব কিভাবে। হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যিনি চার্জে আছেন তিনি পরিচালক অর্থ বরাবর পত্র দিলেই বিষয়টির সমাধান করা যেত। এটি হাসপাতালের ব্যাপার। কর্মচারীদের বেতন বিলম্ব করা ঠিক নয়।
×