ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

৬ কারণে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩:০০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

৬ কারণে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে

অনলাইন রিপোর্টার ॥ প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে মঙ্গলবার বিকালে দুজন মন্ত্রী এবং ছয়জন সচিবকে নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর সভায় উপস্থিত ছিলেন। চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর আগেই ফেইসবুকসহ ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর অভিযোগ যাচাইয়ে একটি কমিটি করে সরকার। মঙ্গলবারের সভায় উপস্থিত সচিব আলমগীর নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানানোর পরদিনই শিক্ষামন্ত্রী এই সভা ডাকলেন। ‘পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে’ অনুষ্ঠিত এই সভার কার্যপত্রে প্রশ্ন ফাঁসের জন্য ছয়টি কারণকে চিহ্নিত করা হয়, যার একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। যে কারণগুলো চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়- ১. বিজি প্রেসে প্রশ্ন কম্পোজ এডিট, প্রিন্ট ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ জনের মতে কর্মী প্রশ্ন দেখতে পারে। তারা প্রশ্ন কপি করতে না পারলেও তার স্মৃতিতে ধারণ করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। ৩/৪ জনের একটি পুরো গ্রুপের পক্ষে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব হতে পারে। ২. নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে। ৩. অতিরিক্ত কেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা করার মতো পর্যাপ্ত জনবল নেই। তাছাড়া ভেন্যুগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল কেন্দ্র থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত। ফলে ৩০ মিনিট সময়ের অধিক পূর্বে কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। ৪. পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। গুটিকয়েক শিক্ষক-কর্মচারীর কারণে গোটা প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। ৫. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস কারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীরা তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এটা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্ব হতে করা সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল, অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কারণে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নজরদাবি করা সম্ভব হচ্ছে না মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুষ্কৃতকারীদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার ও শস্তির প্রদান করতে না পারায় অন্যরাও অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে না। ৬. বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের চিহ্নিত করতে দেখা যাচ্ছে না এবং সন্দেহজনক একাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
×