ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার ॥ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২১:২৪, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭

স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার ॥ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

স্টাফ রির্পোটার, নীলফামারী॥ স্ত্রী ইসমত আরাকে হত্যার অভিযোগে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দপুর প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম অবশেষে গ্রেফতার হলো। গতকাল রবিবার রাতে হত্যার শিকার ইসমত আরার ভাই মইনুল হক চৌধুরী বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় বোনের স্বামীকে প্রধান আসামী এবং অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। আজ সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলামকে আদালতে স্বীকারোক্তি জবাববন্দী প্রদানের প্রেরণ করা হবে। এই দম্পক্তির দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সৈয়দপুর থানার ওসি শাহজাহান পাশা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিদের জানান, গতকাল রবিবার সকালে সৈয়দপুর পৌর শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের কয়ানিজপাড়ায় নিজ বাসার পিছনে প্রায় ৫০ গজ দূরে একটি নির্মানাধীন বাড়ীর একটি কক্ষ থেকে গৃহবধু ইসমত আরার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় স্বামী কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই শফিয়ার রহমানকে(৪৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। ঘটনা নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ইসমত আরার স্বামী শফিকুল ইসলাম পারিবারিক কলহে তার স্ত্রীকে বটি দিয়ে গলাকেটে হত্যার কথা স্বীকার করে। সুত্র মতে প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে শফিয়ার রহমান জড়িত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এদিকে এই ঘটনার ৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ হত্যাকারী স্বামীকে চিহিৃত করতে সক্ষম হওয়ায় এলাকাবাসী পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে। বিভিন্ন সুত্র মতে স্বামীর পরকিয়া প্রেমের সুত্র ধরে দীর্ঘদিন ধরে তাদের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। এমন কলহে বিগত দেড় মাস আগে পরপর দুইবার বিষপানে আতœহত্যার চেষ্টা করেছিল ইসমত আরা । তাকে দুই বারই মুমুর্ষ অবস্থায় সৈয়দপুর হাসপাতালে ভর্তি করে সুস্থ্য করা হয়েছিল। এরমধ্যে ইসমত আরা জানতে পারে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। ফলে কলহ চরম আকার ধারন করে। এরই সুত্র ধরে পরিকল্পিত ভাবে বটি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী। উল্লেখ যে, চলতি বছরের গত ২৯ নবেম্বর সৈয়দপুর পৌরসভার উক্ত চার নম্বর ওয়ার্ডের জসিমবাজার দোলাপাড়া মহল্লায় একটি ভাড়া বাসায় দিনে-দুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে জোড়া মহল্লায় খুনের শিকার হন দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক মামুনুর রশীদ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাথী আরা। ওই ঘটনার মাত্র ১৮ দিনের ব্যবধানে একই এলাকায় এই স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে হত্যা করে। তবে পুলিশ ওই জোড়া খুনের এক কিলার নুর মোস্তফা লাবু ওরফে নুর মোহাম্মদ সুমনকে (২৫)গ্রেফতার করতে সক্ষত হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে সৈয়দপুরের চৌহমহনী হতে গ্রেফতার করা হয় তাকে। সে সৈয়দপুর উপজেলার পোড়াহাট তেলিপাড়া গ্রামের মোহম্মদ আলীর ছেলে। গ্রেফতারের দিন বিকালে বিকালে তাকে আদালতে পাঠানো হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীরারোক্তি জবানবন্দী প্রদান করে। তার স্বীকারোক্তি জবানবন্দী মতে জোড়া খুনের অপারেশনে তিনজন অংশ নেয়। বাকী দুইজন পলাতক রয়েছে। এরা হলো পেট্রোল পা¤প কর্মচারী শিবলী সাদিক ও তার ছোট ভাই সাগর। তাদের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে। তাদের ধরতে পুলিশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে।
×