ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওটিসি বাজার সচল করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০০:০১, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

ওটিসি বাজার সচল করার উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটকে সচল করতে আবারও উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংস্থাটির নেতৃত্বে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে কাজ করছে। প্রায় ‘অচল’ ওটিসি মার্কেটকে সচল করতে গত সপ্তাহে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত সদস্যের এ উপকমিটির আহবায়ক করা হয়েছে বিএসইসির উপ পরিচালক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলামকে এবং সদস্যসচিব করা হয়েছে ডিএসইর ব্যবস্থাপক সৈয়দ ফয়েজ আব্দুল্লাহ। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে চালু হওয়া ওটিসি মার্কেটে বর্তমানে ৬৬টি কোম্পানি থাকলেও দিনে মাত্র এক থেকে দুটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এ বাজারকে গতিশীল করতে এর আগে ‘ডেভেলপমেন্ট ওটিসি মার্কেট অব বাংলাদেশ’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছিল। তিন সদস্যের কমিটির আহবায়ক বিএসইসির পরিচালক মো. মনসুর রহমান। অপর দুই সদস্য হলেন উপপরিচালক শেখ মো. লুৎফর কবীর ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। এ কমিটির অধীনেই সর্বশেষ উপকমিটিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১০ অক্টোবর গঠিত এ উপকমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ডিএসইর উপমহাব্যবস্থাপক মো. শাহীন সারওয়ার হোসাইন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক জিসান মাহমুদ বিন হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, ব্যবস্থাপক মো. আবুল কাদের খন্দকার ও মো. জাহাঙ্গীর আলম। প্রসঙ্গত, ওটিসি মার্কেট সচল করতে এর আগেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। তবে নতুন করে ওটিসি মার্কেটের সচলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে পুঁজিবাজারে সুফল আসবে। আর লেনদেন হবে মূল মার্কেটের মতো। জানা যায়, বর্তমানে ওটিসি বাজারে ৬৬টি কোম্পানি রয়েছে। বাজারের সবচেয়ে দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে এ বাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগই বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া এবং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তি নবায়ন ফি বকেয়া পড়ায় বিভিন্ন সময়ে প্রধান বাজার থেকে কোম্পানিগুলোকে তালিকাচুত করা হয়। এ ছাড়া কাগজের শেয়ারকে ইলেক্ট্রনিক শেয়ারে রূপান্তর বা ডিম্যাট না করার কারণেও কয়েকটি কোম্পানিকে ওটিসিতে পাঠানো হয়। বর্তমানে কযেকটি কোম্পানি মূল মার্কেটে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি ডিএসই বিএসইসির কাছে কিছু প্রস্তাব জমা দেয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ওটিসি মার্কেট পরিচালনায় পৃথক বোর্ড গঠন করা হবে। এ বোর্ডের অধীনেই মূল মার্কেটের মতোই সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ার লেনদেন করতে পারবে। ওটিসিতে শেয়ারের জোগান থাকলেও বর্তমানে বিনিয়োগকারীর ইচ্ছা হলে শেয়ার লেনদেন করতে পারে না। ডিএসইর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মূল মার্কেটের মতোই ওটিসি মার্কেটে নিয়মিত শেয়ার লেনদেন করার সুযোগ থাকবে। এতে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ওটিসিতে লেনদেন করতে পারবে। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম বলেন, ওটিসি মার্কেটের উন্নয়নের জন্য আমরা বিএসইসিতে প্রস্তাব পেশ করেছি। এসব প্রস্তাব গৃহীত হলে মূল মার্কেটের মতোই এখানে পৃথক লেনদেন হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারী এখন ইচ্ছামতো শেয়ার লেনদেন করলেও তখন নিয়মিতভাবেই লেনদেন হবে। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ওটিসি মার্কেটকে সচল করতে ডিএসইর পক্ষ থেকে এর আগেও কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কোনোটিই ফলপ্রসূ হয়নি। ২০১০ সালে বড় ধসের পর পুঁজিবাজারে নতুন করে সাজানো হয়। তবে ওটিসি মার্কেটের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ওটিসিকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করে ডিএসই।
×