ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কীর্তনখোলার তীরে বিনোদন প্রেমিদের ভিড়

প্রকাশিত: ২২:২২, ২৮ জুন ২০১৭

কীর্তনখোলার তীরে বিনোদন প্রেমিদের ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ঈদের ছুটিতে সময় কাটাতে নগরবাসীসহ নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষেরা বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন মুক্ত বাতাসের কীর্তনখোলা নদীর তীর। ঈদের দিন থেকে শুরু করে অদ্যবর্ধি কীর্তনখোলার তীরে প্রকৃতি প্রেমিদের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক তানভির আহম্মেদ অভি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পার্কে প্রবেশের পর নতুন বেড়িবাঁধের ওপর হাঁটতে গিয়ে যেকোন ভ্রমন পিপাসুরা মুগ্ধ হয়ে থাকেন। অনেকে নৌকা ভ্রমণও করেন। তিনি আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিনই মুক্ত বাতাসে ঘোরাঘুরি করতে নগরবাসী এ নদীর তীরে আসেন। তেমনি গত দুইবছর ধরে ঈদের সময় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নারীর টানে বাড়ি ফেরা মানুষেরা প্রাকৃতিক বিনোদনের খোঁজে কীর্তনখোলা নদীর তীরে ছুঁটে আসেন। ফলে ঈদের দিন থেকে শুরু করে অদ্যবর্ধি ভ্রমন পিপাসুদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কীর্তনখোলার তীর। নদীর ধার ঘেঁষে নির্মানাধীন শহর রক্ষা বাঁধের ওয়াকওয়ের সড়ক দিয়ে সহজেই বিনোদন পিপাসুরা হেঁটে কীর্তনখোলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘেঁষে ব্যবসা-বাণিজ্যও এখন জমে উঠেছে। সারাদিন মানুষের আনাগোনায় মুখরিত নদী পারে হাল্কা সবধরনের খাবারের আয়োজন রয়েছে। সেই সাথে মুক্তিযোদ্ধা পার্কে বসার সুরম্য স্থান। যেখানে বসে অনায়াসে নদীর সৌন্দর্য গভীরভাবে অবলোকন করা যায়। নদীর পাড় ঘিরে সব বয়সী মানুষের মিলনমেলা কীর্তনখোলার তীরে চা-কফি কিংবা স্ন্যাকস সবই মেলে এখন হাতের কাছে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আহসান হাবিব কামাল জানান, কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি বেলতলা ফেরিঘাট থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত সম্পন্ন করার পর এ নদীর সৌন্দর্য আরও বেশি মানুষ উপভোগের সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে দেড় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার পর ওই বাঁধ ‘ওয়াকওয়ে’ হিসেবে দর্শনার্থীরা ব্যবহার করে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। সূত্রমতে, শীত, গ্রীস্ম, বর্ষা কিংবা শরত, সব ঋতুই এখন বিনোদন প্রেমিদের কাছে টানছে কীর্তনখোলা নদীর তীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দিনের আলোতে প্রাকৃতিক দৃশ্যের নৈসর্গিকতার পাশাপাশি কুলু কুলু ধ্বনিতে বয়ে চলা কীর্তনখোলা নদীর পানির গতির সাথে মাঝির বৈঠার ছলাত ছলাত শব্দ যেকোনো বিনোদনপ্রিয় মানুষকে মুগ্ধ করে তুলছে। ফলে কীর্তনখোলা নদীর কূলে এখন শুধু তারুণ্যের জয়গান। সকাল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে খানিক রাত অবধি নদীর কূলে মানুষের আনাগোনা। আর তারুণ্যের ঢেউ কীর্তনখোলা নদীর দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। জলরাশির পাশে আনন্দের ঢেউ আর শান্তির সুবাতাস ভরা কীর্তনখোলার নৈসর্গিক রূপে মানুষের টান থাকে সর্বক্ষণ। সারাদিন হৈ চৈ, আনন্দে মাতামাতি, দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদন হিসেবে নৌকা-ট্রলার ও সি-বোট রয়েছে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য। নদীর মাঝামাঝি কিংবা এপার-ওপার সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য নৌকায় উঠে থাকেন দর্শনার্থীরা। একটু দূরবর্তী দপদপিয়া সেতু, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বেলতলা ফেরিঘাটের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আগ্রহী দর্শনার্থীরা ট্রলারে (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) ভ্রমণ করে থাকেন। দিনের আলো শেষে সন্ধ্যার পরে নদী আর চাঁদের জ্যোস্নার সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন শত শত উৎসুক মানুষ। কেউ কেউ চাঁদের মায়াবী আলোতে গভীর রাত পর্যন্ত উপভোগ করেন নয়নাভিরাম এ সৌন্দর্য।
×