জাগো রে তরুণ দল জাগো ছাত্রদল
স্বতঃউৎসারিত ঝর্ণাধারায় প্রায় জাগো প্রাণ চঞ্চল
ভেদ বিভেদের গ্লানির কারা প্রাচীর
ধুলিসাৎ করি জাগো উন্নত শির
কবিতার পঙ্তিগুলোর মতোই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আজীবন গেয়ে গেছেন তারুণ্যের জয়গান। প্রেম বিদ্রোহের কবি হিসেবে আজও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন বাঙালীর জীবনে। আর এ কারণেই তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে তিনি প্রতীয়মান। তাঁর প্রতিটি লেখায় প্রকাশ পায় তারুণ্যের উচ্ছলতা। উৎসাহিত করে সকল বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাবার। তরুণ সমাজকে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুুন্দর আগামীর দেশ গড়ার। একজন মানুষের লেখনী কত শক্তিশালী হতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর লেখনীর ভয়ে কাঁপত ইংরেজ জাতি। কখনই মাথা নত করেননি অন্যায়ের কাছে। যে কারণে আজও আমাদের পথ চলার পাথেয় হয়ে আছেন তিনি। প্রেরণা যোগান সত্যের পথে পথ চলার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। জীবনের প্রতিটি বাঁকেই নজরুলের প্রভাব লক্ষ্যণীয়। যার প্রাভাব পড়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ডেও। মনের মণিকোঠা ছাড়াও প্রতীকীভাবে স্মরণ করা হচ্ছে আমাদের জাতীয় কবিকে। কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কিংবা মৃত্যু যে দিবসই হোক না কেন, নজরুল উৎসব কেন্দ্রিক যে কোন অনুষ্ঠানে এখন নজরুল পোট্রেট সংবলিত টি-শার্ট, ফতুয়া, শর্ট পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার কামিজে অহরহ শোভা পাচ্ছে। অনেকেই এ ব্যাপারে একমত নন। তাদের ধারণা বড় বড় মনীষীদের ছবি সংবলিত এ ধরনের প্রোডাক্ট তাদের ইমেজকে নষ্ট করছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম এ ব্যাখ্যার বিপরীতে অবস্থান করছে। তাদের ধারণা মনের মধ্যে যাকে ধারণ করা যায় তাঁকে বাহ্যিক উপায়ে শ্রদ্ধা জানাতে দ্বিধা কেন থাকবে? তাছাড়া কোন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজগুলো করা হচ্ছে না। সারা বছরই নজরুলবিষয়ক নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এ ধরনের অনুষ্ঠানে নজরুল পোট্রেট সংবলিত পোশাক এ ক্ষেত্রে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। শুধুমাত্র পোশাক নয় পুরো অনুষ্ঠানটি যদি নজরুলময় করে তোলা হয় তাহলে তো বাড়তি আকর্ষণ তৈরি হবে। তরুণদের এ চিন্তা মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলোও পিছিয়ে নেই। তরুণদের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে। যেমন, পোশাক, শো-পিস, ওয়ালম্যাট, ডায়েরি ইত্যাদি। সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর। এ প্রসঙ্গে তরুণ ডিজাইনার ইফতেখার জানান, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক পোশাকে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের। নজরুল জন্মজয়ন্তীর ব্যতিক্রম নয়। যার ফলে বিভিন্ন শো-রুমে শোভা পাচ্ছে নজরুল পোশাক। ডিজাইনের ক্ষেত্রে তাঁর লেখা বিভিন্ন কবিতার পঙ্তি, গানের চরণ ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া তাঁর বিভিন্ন সময়ের মুখায়োবের ছবি নিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে টি-শার্র্ট, ফতুয়া, শর্ট পাঞ্জাবি, শাড়ি এবং সালোয়ার কামিজে। কাপড় সিলেক্ট করা হয়েছে আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে। চারদিকে বিরাজ করছে প্রচ- উষ্ণ আবহাওয়া। গরমে যেন প্রাণ ওষ্ঠাগত। সে কারণে সুতি, কোটা এবং এন্ডিকটনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে কাপড় হিসেবে। বেশকিছু সিøভলেস ড্রেসও ডিজাইন করা হয়েছে যা এবারের জন্য পরীক্ষমূলক। তবে সাড়া মিলছে ভালই। তাছাড়া দাম হাতের নাগালে হওয়াতে দিন দিন বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। টি-শাট ২০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। ফতুয়া ৫০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা। শর্ট পাঞ্জাবি ৬৫০ টাকা থেকে ১২৫০ টাকা। সালোয়ার কামিজ ৮৫০ টাকা থেকে ১৮৫০ টাকা। শাড়ি ৯৫০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাপক সাড় পাওয়াতে এখন ঢাকার বেশির ভাগ ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে নজরুল পোশাকের। এরমধ্যে আজিজ সুপার মার্কেট, এড্রোয়েট, দেশী দশ, আড়ংসহ বিভিন্ন দেশীয় বুটিক ফ্যাশন হাউসগুলো অন্যতম। এসব শো রুমগুলোতে পোশাক ছাড়াও দেখা মিলবে শো পিস, ওয়ালম্যাট, ডায়েরি সহ নজরুল পোট্রেট সংবলিত অন্যান গিফট আইটেম। বিভিন্ন গুণিজনকে উপলক্ষ করে ফ্যাশন ট্রেন্ডের এ ধারা ফ্যাশন জগতকে এগিয়ে নিয়ে গেছে আরও একধাপ।
ছবি : মারুফ মুন্না
মডেল : তূর্য ও সাঞ্জু
পোশাক : নিত্য উপহার
শীর্ষ সংবাদ: