শাহীন রহমান ॥ অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে দেশের অভ্যন্তর থেকে যেমন ঝুঁকি রয়েছে। তেমনি প্লেট বাউন্ডারির কাছাকাছি অবস্থানের কারণে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে। আবার সাগর তলে বড় ধরনের সাইসমিক গ্যাপের কারণেও উপকূলীয় এলাকা সুনামি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে তাদের মতে ভূমিকম্পে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা গেলেই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব। বিশেষ করে জনগণের মধ্যে এখন থেকেই ব্যাপক সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিলে যে কোন মাত্রার ভূমিকম্পে ৫০ ভাগ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। সম্প্রতি নেপালে ভয়াবহ মাত্রার ভূমিকম্পে সে দেশে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে বহু আগ থেকেই বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস দিয়ে আসছেন। নেপাল ভূমিকম্পে এদেশের জনগণের মধ্যেও অনেকটা আতঙ্ক বেড়ে গেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে তা মোকাবেলা করা সম্ভব কি না। এ পরিস্থিতিতে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সচেতনতা গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা। অবশ্য তারা জোর দিয়ে বলছেন বাংলাদেশ যে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে এ নিয়ে কারও মধ্যে কোন দ্বিমত নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে নেপালের মতো ভূমিকম্প হলে কি ধরনের মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে তা সহজেই অনুমেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন একাধিক কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও কোন দ্বিমত নেই। তাদের মতে বাংলাদেশের অবস্থান ভারত বর্মা প্লেটের (টেকটোনিক প্লেট) সংযোগস্থলে। বাউন্ডারি প্লেটের সংঘর্ষের ফলে যে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তা সবচেয়ে ভয়াবহ ও মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। এ কারণেই বাংলাদেশের অবস্থানকে ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকি হিসেবে ধরা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের মাথা ঘেঁষে বেঙ্গল বেসিনের প্রধান অংশ হলো বাংলাদেশ যা ইন্ডিয়া প্লেটের উত্তর পূর্বদেশ নিয়ে গঠিত। এবং ইন্ডিয়া বর্মা ও ইউরেশিয় প্লেটের সংযোগস্থলের খুব কাছাকাছি অবস্থান। এ রকম ভূতাত্ত্বিক অবস্থানের জন্য ভূমিকম্প ও সুনামির জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
তিন প্লেট বাউন্ডারি সংযোগ স্থলে হওয়ার কারণকেই ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকি পূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর জুড়ে হলো ভরত প্লেটের অবস্থান। এ প্লেটের উত্তরে রয়েছে ইউরেশিয়া প্লেট আর পূর্বে বর্মা প্লেটের সংযোগস্থল। কিন্তু ভারত প্লেট উত্তরে ইউরেশিয়া প্লেটে নিচে ও পূর্বে বার্মা প্লেটের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হয় ৫ কোটি বছর আগে ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের সংঘর্ষের কারণ নয়নাভিরাম হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া ২০০৪ সালে ২৬ ডিসেম্বর ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টি হয়েছিল ভারত ও বর্মা প্লেটের সংঘর্ষের কারণে। এ সুনামির ফলে ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ১ লাখের বেশি প্রাণহানী হয়েছিল।
আবার দেশের অভ্যন্তরে রয়েছে চারটি সক্রিয় ভূতাত্ত্বিক গ্যাপ রয়েছে যা বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এসব অভ্যন্তরীণ গ্যাপ বা চ্যুতি রেখা থেকেও অতীতে একাধিকবার ভূমিকম্পও সংঘটিত হয়েছে। এসব চ্যুতি রেখার মধ্যে সিলেটের ডাউকি ফল্টকে বেশি ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। কারণ সিলেটের ডাউকি ফল্ট দেশের ভেতরে যত ফল্ট বা চ্যুতিরেখা আছে সেগুলোর চেয়ে সবচেয়ে বড় বলে মনে করা হচ্ছে। এ ফল্টটি পূর্ব-পশ্চিমে ৩শ’ কিলোমিটার বরাবর দীর্ঘ। মেঘালয়ের একটি শহরের নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে ডাউকি ফল্ট। এটি মেঘালয় থেকে ক্রমেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলে আসছে।
এছাড়াও দেশের উপকূলীয় এলাকা ঘিরেই ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টির জন্য সাইসমিক গ্যাপ বিরাজমান রয়েছে। এ গ্যাপ থেকে যে কোন সময় সুনামিও হতে পারে। তাদের মতে বঙ্গোপসাগরের উত্তরে আন্দামান থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাবডাকশন জোন বরাবর ৬শ’ কিলোমিটারের একটি সাইসমিক গ্যাপ রয়েছে। এখানে কোন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার রেকর্ড নেই। বর্তমানে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি এই সাইসমিক গ্যাপে জমা হয়ে আছে। এই সাইসমিক গ্যাপ আমাদের জন্য অশনি সঙ্কেত। এখান থেকে ৮ মাত্রার মতো শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর তা যদি সাগরতলে হয় তাহলে সেই ভূমিকম্প সুনামি সৃষ্টি করতে পারে।
টেকনাফ-আন্দামান সাইসমিক গ্যাপ থেকে দেশের উপকূলের দুরত্ব ৭৫০ কিমি.। আর এখানে থেকে সুনামি হলে দেশের উপকূলে সুনামির ঢেউ আসতে মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় নেবে। তাই কিছু বোঝার আগেই বঙ্গোপসাগরে আমাদের উপকূলের জনপদ বিলিন হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও ভূমিকম্পের আরও একটি কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করছেন দেশে জনসংখ্যার আধিক্যকে। বাংলাদেশ ভাটির দেশ হওয়ায় কারণে শিলার গঠন এমনিতেই দুর্বল। এছাড়া ঢাকা শহরে রয়েছে দুর্বল অবকাঠামো। জনগণের মধ্যে সচেতনতাও তেমন নেই। আবার ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের মধ্যে বড় ধরনের প্রস্তুতির অভাব রয়েছে। মূলত এসব কারণকেই বাংলাদেশ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণ এলাকা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে পৃথিবীতে মানুষ যত ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে পরিচিত তার মধ্যে ভূমিকম্পই হলো সবচায়ইতে ভয়াবহ দুর্যোগ। কোন প্রকার আগাম বার্তা ছাড়াই এটি আঘাত হানে। এর আঘাত নিষ্ঠুর নির্দয়, নৃশংস ও বিভৎস্য প্রকারের হয়ে থাকে। তাদের মতে ভূমিকম্প হলো কোটি কোটি বছর ধরে বিদ্যমান ও চলমান একটি ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া। যা দুটি প্লেটের সংঘর্ষে সংঘটিত হয়। এর প্রলঙ্কারী আঘাতে পৃথিবীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ও সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে। এ উপমহাদেশে এ পর্যন্ত ভূমিকম্পের আঘাতে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানী হয়েছে। তাদের মতে, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় যার পূর্বাভাস দেয়া এখনও সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে এখানো ব্যাপক গবেষণা চলছে।
তবে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি অনেক মোকাবেলা করা সম্ভব যদি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়। এ বিষয়ে সরকার, এনজিও ও গণমাধ্যম কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের মতে তিন ধরনের প্রস্তুতির মাধ্যমে ভূমিকম্প অনেকটা মোকাবেলা করা সম্ভব। এর মধ্যে ভূমিকম্প মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি থাকতে হবে। ভূমিকম্পকালীন করণীয় ঠিক করা এবং পরবর্তী প্রস্তুতি ও করণীয় ঠিক করা।
এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনগণকে সচেতন করে তোলাই হলো ভূমিকম্প প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আকতার বলেন, দেশের সব জনগণকে ভূমিকম্পে করণীয় সম্পর্কে সচেতন করে তোলা গেলে প্রায় ৫০ ভাগ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারকে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এছাড়া মিডিয়াও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। তার মতে জনগণকে সচেতন করতে সরকার প্রয়োজনে বছরে দুটি ভূমিকম্প মহড়ার আয়োজন করতে পারে। আর এ মহড়া সরাসরি টেলিভিশনে প্রচার করতে হবে। তাহলে জনগণ অনেকটা সচেতন হয়ে উঠবে।
এর বাইরে বিশেষজ্ঞ ভূমিকম্পের আগে ও পরে করণীয় সম্পর্কে কতগুলো নির্দেশনা দিয়েছেন। যেগুলো অনুসরণ করে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় বিশেষভাবে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভূমিকম্পকালীন সময়ে করণীয় ॥ হঠাৎ ভূমিকম্পের কারণে অনেকে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো দৌড়াদৌড়ি না করে এক জায়গায় স্থির থাকলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা কম থাকে। এছাড়া ভবনে ভেতরে অবস্থানকালে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ভবন থেকে ছুটে বের হওয়া যাবে না। বরং ভবনে বিমের পাশে অথবা কোন এক কোনে অবস্থান নিতে হবে। এ সময় মাথায় বালিশ রাখতে হবে। এছাড়া দরজার চৌকাঠের নিচে, শক্ত টেবিল, ডেস্ক, খাট বা বেঞ্চের নিচে অথবা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। লিফট বা এলিভেটর ব্যবহার করা যাবে না। ছাদ, বারান্দা বা জানালা দিয়ে লাফিয়ে নিচে নামা যাবে না। গ্যাসের চুলা জ্বালানো থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা নিভিয়ে দিতে হবে। সম্ভব হলে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল সংযোগ দ্রুত বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। বৈদ্যুতিক ও টেলিফোন খুঁটি, উঁচু দেয়াল ও চলামান গাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিতে হবে। চলন্ত গাড়িতে অবস্থান করলে নিরাপদে খোলা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে ভেতরেই অবস্থান করতে হবে। ব্রিজ, কার্লভাট, ফুটওভার ব্রিজ, ফ্লাইওভার এবং আন্ডারপাস ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। অহেতুক ঝুঁকিপূর্ণ কোন কাজ করা যাবে না। আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করা যাবে না। এতে বিপদের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে পরিবারের শিশু-কিশোর ও বয়োজ্যেষ্ঠরা আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পারে।
ভূমিকম্পের আগে ॥ কোন আগাম সতর্কতা ছাড়াই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হলেও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কিছু আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে পরিবারের সদস্য ও কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সচেতন করে তুলতে হবে। যেহেতু বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ দেশ এবং বিশ্বে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত রয়েছে তাই ভূমিকম্প সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। ভূমিকম্পকালীন সময়ে কোথায় ও কিভাবে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে তা আগ থেকেই চিহ্নিত করে রাখতে হবে। বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল সংযোগ কোথায় অবস্থিত তা পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখতে হবে। জরুরী অবস্থায় কে কিভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে তা থেকেই ঠিক করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ, উদ্ধার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ধারণা গ্রহণ করতে হবে। শিশু কিশোরদের ভূমিকম্প সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। প্রয়োজনে নিজ বাড়িতে একাধিকবার মহড়ার আয়োজন করা যেতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, শিল্পকারখানা, সুউচ্চ ভবন, মার্কেট, হাসপাতাল, হোটেল রেস্তরাঁ ও অন্য কর্মস্থলে দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরী নির্গমন পথ আগ থেকেই প্রস্তুত রাখতে হবে। ভবনের প্রতি তলায় অগ্নিনির্বাপণ ‘ফায়ার এক্সটিংগুইসার’ উন্মুক্ত ও নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে এবং এর ব্যবহার বিধি সকলকে শিখিয়ে রাখতে হবে। ভবনের ভেতরে ঝুলন্ত বস্তু ও আলমারিগুলো শক্ত দেয়ালের সঙ্গে রাখতে হবে। যাতে ভূমিকম্পের সময় তা শরীরের ওপর এসে না পড়ে। আবাসিক ভবন ও প্রতিষ্ঠানে হালকা উদ্ধার সরঞ্জাম ও প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে এবং নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা যেতে পারে। এসব স্বেচ্ছাসেবক দলের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা, সন্ধান ও উদ্ধার সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সর্বোপরি ইমারত নির্মাণ বিধি মেনে ভবন নির্মাণ করলে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।
ভূমিকম্পের পরে ॥ বিশেষজ্ঞদের মতে সবচেয়ে বেশি সচেতন করে তুলতে হবে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতরা সম্পর্কে। এ বিষয়ে খুব সাবসাধনতা অবলম্বন করতে হবে। ভূমিকম্পের পরে খোলা ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে। বহুতল ভবনের বাইরের দেয়াল ও জানালা, বৈদ্যুতিক তার ও খুঁটি হতে দূরে থাকতে হবে। গ্যাস বা রাসায়নিক পদার্থের গন্ধ পেলে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত ও নিরাপদে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে হবে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় গলি ও প্রধান সড়ক পথ থেকে ধ্বংসস্তূপ অপসারণে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে যাতে উদ্ধারকর্মী বাহিনী দ্রুত তাদের কাজ শুরু করতে পারে। মানসিক বিপর্যস্ত ও শিশুদের সান্ত¡না দেয়ার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে তাদের পাশে থাকতে হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: