নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৪ মার্চ ॥ বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মরাজান খালের আয়রন সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। দুই উপজেলার সেতু বন্ধন সেতুটি ভেঙ্গে পরায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার হতে হয়। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি তাদের।
জানা গেছে, বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত মরাজান খাল। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ ওই খালের গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানে আয়রন সেতু নির্মাণ করে। আমতলী ও পটুয়াখালী সদর দুই উপজেলার সেতু বন্ধন এ সেতুটি ২০১৬ সালে ভেঙ্গে যায়। সেতুটি ভেঙ্গে পরায় চরম দুর্ভোগে পরে ৫০ হাজার মানুষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে জানানো হলেও সেতুটি নির্মাণের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। গত তিন বছর ধরে সেতুটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। ওই সেতু দিয়ে উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া, উত্তর কালামপুর নুরানী দাখিল, ন.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসা, উত্তর-পূর্ব কলাগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য কালিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এছাড়া ওই সেতু দিয়ে কলাগাছিয়া বাজার, ঘাসের হাট বাজার, কালিবাড়ী, বাজারঘোনা ও মুরিচবুনিয়া গ্রামের মানুষের দু’পারে যাতায়াত করতে হয়। সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় সাত কিলোমিটার ঘুরে সেতু পার হয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ওই সেতুটি নির্মাণের জন্য আমতলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ ও উপজেলা পরিষদকে জানিয়েছেন। কিন্তু গত তিন বছরে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না তারা। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত মরাজান খালের সেতুটি মাঝখান দিয়ে ভাঙ্গা। ভাঙ্গা অংশে স্থানীয় লোকজন কলাগাছ দিয়ে রেখেছেন। সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আবু বকর, নুর আহম্মদ, গোলাম বারী, জেসমিন ও সুরাইয়া জানান, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতুটি পার হয়ে মাদ্রাসায় আসতে হয়। সেতুর ভাঙ্গা অংশ পার হতে খুব ভয় লাগে, কোন সময় ব্রিজ দিয়ে পড়ে মারা যাই। গত তিন বছর ধরে সেতুটি এ অবস্থায় পরে থাকলেও কেউ নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে না। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দাবি জানান তারা। স্থানীয় আবদুস সালাম মৃধা, মহিউদ্দিন ও মাওলানা রফিকুল্লাহ জানান, গত তিন বছর ধরে সেতুটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগকে জানানো হলেও তারা সেতু নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলবি ও আমতলী জমিয়াতে মোর্দারেছিনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটি ভাঙ্গার পরপরই আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলামকে জানিয়েছি কিন্তু তিনি সেতু নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: