ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সামাজিক দ্বন্দ্ব ভোগান্তি হ্রাস পাবে

অনলাইনে জমির আরএস খতিয়ান পাওয়া যাবে

প্রকাশিত: ১১:১২, ১ মার্চ ২০১৯

অনলাইনে জমির আরএস খতিয়ান পাওয়া যাবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জনগণের ভোগান্তি লাঘবে অনলাইনের মাধ্যমে জমির আর এস খতিয়ান প্রদান করছে সরকার। এতে সামাজিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মামলার ভোগান্তি এবং মধ্য-স্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য হ্রাস পাবে। এছাড়া নাগরিকের সময়, খরচ এবং যাতায়াত কমে যাবে। সর্বোপরি স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাবে। সেবাগ্রহীতাগণ খুব সহজেই এখন নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে আর এস খতিয়ান পেতে পারেন। এই লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বুধবার অনুষ্ঠিত দেশব্যাপী আর এস খতিয়ান অনলাইনে অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার সময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, এমপি এসব কথা বলেন। ‘আর এস খতিয়ান’ এ্যাপ্লিকেশনটি মূলত ভূমি তথ্য ও সেবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (িি.িষধহফ. মড়া.নফ) একটি অংশ। এছাড়া মোবাইল এ্যাপ, ‘ৎংশ.ষধহফ.মড়া.নফ’ এবং ‘ফৎৎড়ভভরপব.ষধহফ.মড়া.নফ’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক ঘরে বসে অথবা নিকটস্থ যে কোন ডিজিটাল সেন্টারে অথবা পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে নিজের জমি সংক্রান্ত তথ্য দেখার সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, ‘অনলাইনে আর এস খতিয়ান’ সহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিশেষ উদ্যোগের অধীন বাস্তবায়িত হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় ৩২ হাজার জরিপকৃত মৌজার ১ কোটি ৪৬ লাখ আর এস খতিয়ানের জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। ভূমিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সেবাগ্রহীতাগণের সুবিধার্থে অভিযোগ কেন্দ্র গঠনের জন্য হটলাইন, সরকারের সঙ্গে ভূমি সম্পর্কিত বিভিন্ন লেনদেনের জন্য ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালুকরণের জন্য একটি পেমেন্ট গেটওয়ে স্থাপন, অনাবাসী বাংলাদেশীদের সেবা দেয়ার জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু এবং ল্যান্ড ব্যাংক করার বিষয়গুলোও প্রক্রিয়াধীন। এগুলো মূলত পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ইন্টিগ্রেটেড অটোমেশনের ভেতর নেয়ার পর্যায়ক্রমিক ধাপ। খুব শীঘ্র সমগ্র বাংলাদেশকে ই-মিউটেশনের আওতায় আনা হবে। মন্ত্রী বলেন, দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সু-শাসন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। ভূমি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন যেন টেকসই সেজন্যে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ার পর আমি ৯০ দিনের প্রাথমিক কর্মসূচী গ্রহণ করি। মেয়াদের প্রথম দেড় বছর স্বল্প মেয়াদী, পরবর্তী দেড় বছর মধ্যম মেয়াদী এবং শেষ দুই বছরকে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুরো পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনার ‘ডেডলাইন’ সাজিইয়েছি। ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সম্যক ধারণা বেশ কম, যদিও সবার জীবন এবং পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে দেশব্যাপী শীঘ্রই ভূমি সপ্তাহ এবং ভূমি উন্নয়ন মেলা পালন করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলোতে কর্মরত গণকর্মচারীবৃন্দ সম্পত্তির হিসেব জমা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনে কর্মরতরা নিজ নিজ কালেক্টরেট অফিসে সম্পদের হিসেব দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই আপনারা তা জানবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় এখন আগের মতো অবস্থানে নেই। এখন কর্মচারীরা অনেক ভালভাবে কাজ করছে। উপরের দিকে দুর্নীতি কমে এসেছে। উপরের দিকে দুর্নীতি কমে আসলে নিচের দিকেও দুর্নীতি কমে আসবে। মন্ত্রী বলেন, আমি টিমে বিশ্বাসী। আশাকরি সবাই মিলে ভালভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভূমি সেক্টরের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। কাজের স্বার্থে তার দরজা সবার জন্য খোলা। বিভিন্ন জায়গায় উক্ত এলাকাভিত্তিক বিশেষ সমস্যাও থাকতে পারে। মাঠপর্যায় থেকে আইডিয়া নিতে নেয়া হবে। জনস্বার্থে যে কোন কার্যকরী আইডিয়া গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হবে। মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি পর্যায় নিয়ে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভূমিমন্ত্রী ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভূমি সচিব মোঃ মাক্ছুদুর রহমান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×