ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১০ ডিসেম্বর ॥ আজ ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল সূর্য সন্তানরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে। উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। জয় বাংলা স্লোগানে মুখোরিত হয় পুরো জেলা। মানুষ পায় মুক্তির স্বাদ। যুদ্ধকালীন সময়ে টাঙ্গাইলের অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ যুদ্ধের কাহিনী দেশের সীমানা পার হয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পরপরই দেশ শত্রু মুক্ত করতে টাঙ্গাইলে গঠন করা হয় স্বাধীন বাংলা গণমুক্তি পরিষদ। এছাড়া কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে নিজস্ব একটি বাহিনী গঠিত হয়। চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ। ২৬ মার্চ গণমুক্তি পরিষদের উদ্যোগে টাঙ্গাইল সদর থানায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। ২৭ মার্চ বিন্দুবাসিনী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় টাঙ্গাইলের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। ঐদিন রাতেই সার্কিট হাউজ আক্রম করে মুক্তিযোদ্ধারা। অতর্কিত এ আক্রমণে ২ জন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয় ও ১৫০ জন আত্মসমর্পণ করে। হানাদার বাহিনী টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করলে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে চলে আসে। তারা নতুন করে অস্ত্র সংগ্রহ ও সংগঠিত হতে থাকে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়। শুরু হয় বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে একের পর এক যুদ্ধ। চারদিক থেকে আক্রমণে দিশেহারা হয় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ১০ ডিসেম্বর বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের উত্তরে পৌলিতে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর প্রায় ২ হাজার সেনা অবতরণ করায় হানাদারদের মনোবল একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। তারা ছুটতে থাকে ঢাকার দিকে। ১০ ডিসেম্বর রাতেই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি টাঙ্গাইল সদর থানা দখল করে সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করতে থাকেন এবং সারা শহর নিজেদের দখলে নিয়ে হানাদারদের ধরতে থাকেন। এভাবেই টাঙ্গাইল শহর সম্পূর্ণ হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তির স্বাদ পেয়ে উল্লসিত মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। মুন্সীগঞ্জ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে গৌরবোজ্জ্বল দিন আজ মঙ্গলবার। ’৭১-এর দিনে মুন্সীগঞ্জ হানাদার বাহিনীমুক্ত হয়েছিল এই জনপদ। তাই দিবসটি পালনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও প্রশাসন নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ১৯৭১-এ রক্তঝরা দিনগুলোতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো মুন্সীগঞ্জ জেলাও গর্জে উঠেছিল। ২৯ মার্চ হরগঙ্গা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান কলেজের শহীদ মিনারে সংগ্রামী ছাত্র জনতার সম্মুখে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ঐদিনই ছাত্র জনতা মুন্সীগঞ্জ অস্ত্রাগার লুট করে এবং যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি হিসেবে মুন্সীগঞ্জের প্রতি পাক-সেনাদের তীক্ষè দৃষ্টি ছিল। তাছাড়া মুন্সীগঞ্জ ঢাকার সন্নিকটে হওয়ায় পাক বাহিনী এলাকাটি দখলে রাখতে চেয়েছিল। পাক বাহিনী যাতে ঘাঁটি করতে না পারে তাই সেজন্য ধলেশ্বরী তীর এলাকায় বাঙ্কার তৈরি করে মুক্তিবাহিনী পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে সেনাবাহিনী মুন্সীগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে পহেলা মে। একযোগে ধলেশ্বরী তীরের মুন্সীগঞ্জ শহর এবং আবদল্লাপুর লঞ্চঘাট দিয়ে পাকি বাহিনী প্রবেশ করে। এর পরই চালায় ধ্বংসযজ্ঞ।
×