ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় ফের মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১৯ জুন ২০১৮

বগুড়ায় ফের মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধার লাইভ সাইজের ভাস্কর্যটি ফের ভেঙ্গে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। সুধীজনেরা বলছেন, এটা স্বাধীনতা বিরোধীদের কাজ। ভাস্কর্যটি নগরীর প্রবেশপথ বনানী সড়ক দ্বীপে স্থানান্তরিত হওয়ার পর এ নিয়ে দুই দফায় ভাঙল। গত শতকের আশির দশকের মধ্যভাগে নগরীর কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে উঁচু বেদীর ওপর স্থাপিত হয়। ভাস্কর্যে ছিল, একজন মুক্তিযোদ্ধা বাম হাতে রাইফেল পেছনে রেখে ডান হাত উঠিয়ে শান্তির শ্বেত কপত উড়িয়ে দিচ্ছে। নন্দিত এই ভাস্কর্যটি ঢাকায় বানিয়েছিলেন বগুড়ার গাবতলির ভাস্কর্য শিল্পী সুলতানুল হক। যা ঢাকা থেকে পরিবহনে আনা হয়। ভাস্কর্যটি নগরীর কেন্দ্রস্থলে স্থাপিত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলিত হয়। সাধারণের মধ্যে প্রশংসিত হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতে জোট ক্ষমতায় আসার পর হঠাৎ ভাস্কর্যটি নামনো হয়। ওই সময়ে বগুড়ার মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। পরে সাত মাথা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দক্ষিণে বনানী সড়ক দ্বীপে স্থানান্তর করা হয়। বগুড়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসক রফিকুল মোহামেদ (যিনি ছিলেন তারেক রহমানের বিশ^স্ত অনুগত এবং বিএনপির লেজুরবৃত্তির মানসিকতার কর্মকর্তা) এই ভাস্কর্য সরিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন। এরপর এই ভাস্কর্যটির ওপর আঘাত আসতে থাকে। বছর কয়েক আগে ভাস্কর্যটি ভেঙ্গে পড়লে বলা হয় রাতে সড়ক দ্বীপে বেপরোয়া গতির ট্রাক উঠলে ভাস্কর্যটি ভেঙ্গে পড়ে। ওই ঘটনায় ভাস্কর্যটির মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। তারপর ভাস্কর্যটি পুনরায় ঠিকঠাক করে স্থাপিত হয়। এবার ঈদের দিন শনিবার রাতে ভাস্কর্যটি ফের ভেঙ্গে পড়ে। এবার ভাস্কর্যটির হাত পা ভেঙ্গে ফেলা হয়। এবারও বলা হয় ট্রাকের ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়েছে। তবে বিষয়টি সাধারণ মানুষ সহজে মেনে নিতে পারছে না। বলাবলি হচ্ছে, ট্রাক তো প্রতিনিয়ত চলাচল করে। আর ট্রাকের ধাক্কায় ওভাবে ভেঙ্গে পড়বে না। বোঝা যায় হ্যামার জাতীয় শক্ত কিছু দিয়ে হাত পা ভাঙ্গা হয়েছে। এই বিষয়ে বগুড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রেজাউল করিম মন্টু বলেন ‘ট্রাক ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়েছে এটা অসম্ভব। স্বাধীনতা বিরোধীরা বারবার এভাবেই আঘাত করছে।’ সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মাছুদার রহমান হেলাল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা অশনি সংকেত। যা প্রমাণ করে স্বাধীনতা বিরোধীরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে।’ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ বলেন, ‘যারা ভাস্কর্য ভাঙছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙ্গা মেনে নেয়া যায় না।
×