ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাতৃসদন কেন্দ্রসহ ২৬ স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঁচ বছর বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২২ নভেম্বর ২০১৭

মাতৃসদন কেন্দ্রসহ ২৬ স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঁচ বছর বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ হতদরিদ্র, বস্তির নারী ও শিশুর চিকিৎসা পরিষেবায় বগুড়ায় নির্মিত ‘নগর মাতৃসদন কেন্দ্র’ নামে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং তা ঘিরে যে ৫টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ২০টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্থাপিত হয়েছিল তা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ড আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় পরিষেবার এই কেন্দ্রগুলো নির্মিত হয় গত ২০০৭ সালে। পরিচালন দায়িত্ব পেয়েছিল পৌরসভা। বলা হয়েছিল পাঁচ বছরের এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর আরেকটি নতুন প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এই হাসপাতাল আর চালু হয়নি। এই বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কথা- দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এ প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ানোয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে আছে। বিকল্প উপায়ে চালু করার চেষ্টা করা হয়। পরে তাও আর সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, বগুড়াসহ দেশের আরও চার পৌরসভায় এ ধরনের প্রকল্প চালু হয়েছিল। সবই ২০১২ সালের ৩০ জুন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বগুড়া ছাড়া বাকি তিন পৌরসভা নতুন প্রকল্পের আওতায় পুনরায় চালু হয়। এই তালিকায় বাদ পড়ে যায় বগুড়া। তা আর বহাল হয়নি। বহুতল ভবনের ভেতরে উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জামাদিতে মরিচা পড়েছে। আসবাবপত্র ও বেডগুলোতে জমেছে ধুলাবালির আস্তরণ। ইঁদুর বেড়াল তেলেপোকার অভয়াশ্রমে পরিণত হওয়া এই কেন্দ্রে পৌর কর্তৃপক্ষ তিন পাহারাদার নিয়োগ দিয়েছে। তারাই এখন পালাক্রমে বন্ধ কেন্দ্র পাহারা দিচ্ছে। নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা পরিষেবা পেত। সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে পেতে পারে এমন প্রায় সাড়ে দশ হাজার পরিবারকে চিহ্নিত করে পরিষেবার কার্ড দেয়া হয়। এই কার্ডের আওতায় ওই সব পরিবারের নারী ও শিশুসহ ৫০ হাজার সদস্য সেবা পেত। ২০ শয্যার হাসপাতালে ইনডোর আউটডোরে প্রসূতি মা শিশুদের সেবার সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভকালীন পরিচর্যা থেকে শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো। মাতৃসদন কেন্দ্রে ৫ ডাক্তার, প্রতি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন করে ডাক্তার ও ৫ জন করে স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ১শ’ ৪২ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্যাটেলাইট ক্লিনিকের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসত। সেবা দ্রুত প্রদানে সচেষ্ট থাকতেন স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত সকলেই। বগুড়ার পৌরসভার পরিচালনায় এই কেন্দ্রগুলো বন্ধ হওয়ায় হতদরিদ্ররা দ্রুত হাতের নাগালের মধ্যে যে সেবা পেত তা আর পাচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য- পৌরসভার নিজস্ব তহবিল দিয়ে হাসপাতাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক পরিচালনা করা সম্ভব না হওয়ায় বন্ধ করে দিতে হয়েছে। উৎসের সন্ধান করেও তা সফল হয়নি। নতুন করে কোন প্রকল্পের আওতায় অথবা কোন দাতা সংস্থা এগুলোকে চালু না করলে স্বাস্থ্য সেবার এই কার্যক্রম আর চালু হবে না।
×