ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা আজ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা আজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশজুড়ে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ। চলবে ২৬ নবেম্বর পর্যন্ত। পরীক্ষায় এবার অংশ নিচ্ছে ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী। যার মধ্যে প্রাথমিকে ২৮ লাখ চার হাজার ৫০৯ জন এবং মাদ্রাসার ইবতেদায়িতে দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৫৬ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য এবারও ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় থাকবে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে যাবতীয় কর্মকা- শেষ করা হয়েছে বলে বলছেন মন্ত্রণালয়। দুর্গম এলাকায় ২০৪টি কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রতিবছরের মতো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতি জেলায় পরীক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নম্বর ৯৫১৫৯৭৭ এবং অধিদফতরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে টেলিফোন নম্বর ০২-৫৫০৭৪৯১৭, ০১৯১৩৪৮১৬৭২., ০১৭১২৪১৩১০০ এবং ই-মেইল ফফবংঃধনফঢ়ব@ মসধরষ.পড়স। সমাপনী পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল তথ্য এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা যাবে। এদিকে এবার প্রাথমিকে অংশ নিতে যাওয়া ২৮ লাখ চার হাজার ৫০৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রের চেয়ে বেশি। ছাত্র ১২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৫ জন ও ছাত্রী ১৫ লাখ চার হাজার ৫২৪ জন। ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীসংখ্যা এক লাখ ৮৯ হাজার ৮০১ জন বেশি। দুই পরীক্ষায় গত বছর মোট ৩২ লাখ ৩০ হাজার ২৮৮ জন অংশ নিয়েছিল। সে হিসেবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন। ২০১৫ সালে ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৪ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী এই সমাপনীতে অংশ নিয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, আগে যখন শতভাগ শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পেত না, তখন ভুয়া তালিকা তৈরি করে সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করত। বর্তমানে শহর, বন্দর, নগর ও মহানগরে শতভাগ বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। কোন জায়গা উপবৃত্তির বাইরে নেই। কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে, অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখন যে কাজগুলো করা হচ্ছে, তার ফলে যেসব জায়গায় সমস্যা ছিল, সেটা সমাধান করতে পেরেছি। টানা দুই বছর কেন পরীক্ষার্থী কমল? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তা গবেষণার বিষয়। আমি পরিসংখ্যানবিদ না। তবে ক্লাসে যা থাকবে তার থেকে বেশি করে দেখানোর কোন সুযোগ নেই। দেশে সাত হাজার ২৬৭টি এবং বিদেশের ১২টি কেন্দ্রে এবার সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে প্রশ্ন ফাঁস এড়াতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র বিশেষ নিরাপত্তায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুর্গম এলাকার ২০৪টি কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থায়। পরীক্ষার দিন উপজেলা থেকে কেন্দ্র সচিবের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। পরীক্ষার দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না- জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের যত প্রকার ছিদ্র এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে, যে ছিদ্রগুলো দিয়ে পানি আসতে পারে, সবটাই বন্ধ করার চেষ্টা করছি। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে গত বছর থেকে দেশের ৬৪ জেলাকে বিশেষ আটটি অঞ্চলে ভাগ করে আট সেট প্রশ্ন ছাপিয়ে এই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয় ২০০৯ সালে। আর ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হয় ২০১০ সালে। প্রথম দুই বছর বিভাগভিত্তিক ফল প্রকাশ করা হয়। ২০১১ সাল থেকে গ্রেডিং পদ্ধতিতে এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে এই পরীক্ষার সময় আধাঘণ্টা বাড়িয়ে আড়াই ঘণ্টা করা হয়। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সূচী ॥ সূচী অনুযায়ী, আজ ১৯ নবেম্বর ইংরেজী, ২০ নবেম্বর বাংলা, ২১ নবেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২২ নবেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান, ২৩ নবেম্বর ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং ২৬ নবেম্বর গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইবতেদায়ি পরীক্ষার সূচী ॥ আজ নবেম্বর ইংরেজী, ২০ নবেম্বর বাংলা, ২১ নবেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং বিজ্ঞান, ২২ নবেম্বর আরবি, ২৩ নবেম্বর কুরআন ও তাজবিদ এবং ২৬ নবেম্বর গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসা ও মুনাফার চিন্তা ত্যাগ করে জনকল্যাণ, সেবার মনোভাব ও শিক্ষায় অবদান রাখার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা ও পরিচালনা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে উন্নতমানের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সচেতন হতে হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তৃতায় একথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এ মুহিত, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ ওয়াদুদ ম-ল বক্তব্য রাখেন। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন নাগরিক টিভির চীফ অপারেটিং অফিসার ডাঃ আবদুন নূর তুষার। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশিদিন চলতে পারবেন না। যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে এখনও যাননি এবং একাধিক ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত চাপ রেখেও সঠিক ধারায় আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া তারা আর কোন পথ খোলা রাখেননি।
×