ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত জাপার

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৪ মে ২০১৭

মন্ত্রিসভা থেকে  বেরিয়ে আসার  সিদ্ধান্ত জাপার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এ সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু একমত পোষণ করেছেন। তবে বাদ সেধেছেন পার্টির সিনিয়র নেতা, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। মঙ্গলবার রাতে পার্টির সংসদীয় দলের সভায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, আমরা দলকে আরও শক্তিশালী করতে চাই। তার অংশ হিসেবে দেশের রাজনীতিতে তৃতীয় একটি জোট করতে যাচ্ছি। দেশের জনগণের পাশাপাশি জোটের নেতারাও চান জাতীয় পার্টি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করুক। তা না হলে দেশবাসীর আস্থা ফিরে পাওয়া যাবে না। এ সময় রওশন এরশাদ পার্টির চেয়ারম্যানের বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন আছে। এ বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মন্ত্রিসভা থেকে আমাদের পদত্যাগের বিকল্প নেই। এ সময় মন্ত্রীদের পদত্যাগের পক্ষে দলের সিনিয়র নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ফখরুল ইমামসহ সিংহভাগ এমপিই বক্তব্য দেন। যদিও সম্প্রতি দলের একটি বৈঠকে জোট গঠনের বিরোধিতা করেন রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ইচ্ছা করলেই যে কারও সঙ্গে জোট করা যায় না। ঠিকও হবে না। আমি জোটের পক্ষে নই। আমরা যেমন ছিলাম তেমন থাকতে চাই। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সাত মে এরশাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। এদিন সংবাদ সম্মেলন করে নতুন জোটের কথা ঘোষণা দেবেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। এর আগেই তারা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের বিষয়টি চূড়ান্ত করে রাজনীতির মাঠ গরম করার চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, দলের সকল নেতার ঐকমত্য থাকলে সাত তারিখের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের ঘোষণা আসতে পারে। সংসদীয় বৈঠকে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দ্বিমত পোষণ করে বলেন, আমাদের এ মুহূর্তে সরকার থেকে বের হওয়া ঠিক হবে না। সময় আরও সামনে আছে, আরও অপেক্ষা করা উচিত। এদিকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়ায় দলের শীর্ষনেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ভীষণ খুশি। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দুই নৌকায় পা রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ানো যায় না। সরকারে থেকে সরকারের বিরোধিতা করা যায় না। মানুষ আমাদের নিয়ে হাস্যরস করে। দলকে সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবে রূপ দিতে জাতীয় পার্টিকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোন পথ আছে বলে আমার জানা নেই। অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, দলকে জনগণের কাছে বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আমরা অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিছুটা সফলও হচ্ছি। কিন্তু আমি মাঠে-ঘাটে কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে দেখেছি, তারা চায় না আমাদের এমপিরা সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকুক। কর্মীরাই আমাদের পার্টির প্রাণ। তাছাড়া শুধু দলীয় কর্মীরাই নয়, সাধারণ মানুষও চায় না জাতীয় পার্টি মন্ত্রিসভায় থাকুক। এর আগের একাধিকবার এরকম সিদ্ধান্ত হয়েছে দলে। প্রতিবারই কোন না কোন নেতা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
×