ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়ের জন্য ঈদের জামা-জুতা কেনা হলো না সাইদুরের

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মেয়ের জন্য ঈদের জামা-জুতা কেনা হলো না সাইদুরের

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে ট্যাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে পাঁচজন সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সুন্দিশাইল গ্রামের হাসান সিদ্দিকী (৫০), ওয়ালি হোসেন (৩২), এনামুল হক (৪৫), সাইদুর রহমান (৫৩) ও কানিশাইল গ্রামের রেজওয়ান আহমদ (৩২)। নিহতদের ঘরে ঘরে চলছে আহাজারি, শোকের মাতম। ঈদে বাড়ি ফিরে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ করার কথা ছিল তাদের। সেই আনন্দ এখন বিষাদে রূপ নিয়েছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে বাকরুদ্ধ নিহতদের স্বজনরা। নিহত সাইদুরের স্বজনরা জানান, সাত বছরের মেয়ে সাদিয়ার জন্য ঈদের জামা ও জুতা নিয়ে রবিবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল ট্যাম্পাকোর শ্রমিক সুন্দিশাইল গ্রামের বাসিন্দা সাইদুরের। কিন্তু কিনতে পারলেন না তিনি। তার আগেই আগুনে পুড়ে মারা গেলেন তিনি। সাইদুরের মৃত্যু সংবাদ পরিবারের ওপর বজ্রপাতের মত আঘাত হেনেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। নিহত এনামুল ১২ বছর ধরে কাজ করছিলেন কারখানায়। দরিদ্র সংসারে অন্ধ বাবা সোনা মিয়াকে বলেছিলেন তিনি, রবিবার ঈদের বেতন ও বোনাস নিয়ে বাড়ি আসবেন। শোধ করবেন বাবার ঋণের টাকা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোনা মিয়া বলেন, ‘ছেলে কইছলো, টাকা লইয়া আইবো, ঋণ মারব। কিন্তু সকালে ছেলের বউ কইলো, কারখানায় আগুন লাগছে। পুড়ে মারা গেছে এনামুল। আগুন সব শেষ করি দিছে। এখন আমি কিলা খাইমো, কিলা চলমু।’ নিহত হাসান সিদ্দিকীর ছেলে মারজান বলেন, ‘বাবার উপার্জনেই চলত তাদের সংসার। সকালে বাবার মৃত্যুর খবর শুনে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।’ সুন্দিশাইল গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, কারখানার মালিক সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের বাড়িও সুন্দিশাইল গ্রামে। গ্রামের দরিদ্র প্রায় ৫০ জন মানুষকে চাকরি দিয়েছিলেন তিনি তার কারখানায়। তারা প্রায় এক যুগ ধরে কাজ করে দরিদ্র পরিবারের হাল ধরে রেখেছিলেন।
×