সিরিয়ার বিরোধী রাজনীতিক ও বিদ্রোহী পক্ষের পক্ষ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার একটি দিক নির্দেশনা তৈরি করেছে। এতে সব পক্ষের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান হয়েছে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বিরোধী নেতৃবৃন্দ সরকারের সঙ্গে আলোচনার মূলনীতিগুলো ঠিক করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় আসাদ সরকারের যে কোন অংশীদারিত্ব থাকতে পারবে সে কথা তারা আবারও জোর দিয়ে বলেছেন। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সিরিয়ার শাসক বাশার আল আসাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যোগ দেয়ার আগে দেশটির বিরোধী পক্ষগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এর মূলনীতিগুলোর ঠিক করেছে। তারা সব পক্ষকে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সিরিয়া প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন। রিয়াদে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সরকারের সঙ্গে শান্তি মূল আলোচ্য নির্ধারণের ব্যাপারে বিরোধী পক্ষগুলোর মতৈক্য হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বৈঠক শেষে দেয়া বিবৃতিতে বিরোধীরা সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এমন একটি বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান হয়। একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে আসাদের এবং তার সহযোগীদের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে বলেও তারা দাবি করেছে। বিবৃতিতে বিরোধীদের আগের কট্টর অবস্থান পরিবর্তনের সুর শোনা যাচ্ছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন। আগে বিরোধীদের প্রধান শর্ত ছিল আলোচনা শুরুর আগেই প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে হবে। এদিকে, বৈঠকে বিরোধী পক্ষগুলোর ঐকমত্যে পৌঁছানোর ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্র্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, জানুয়ারিতে শান্তি আলোচনা শুরুর আগে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তবে এখনও অনেক কিছু করা বাকি রয়েছে, যেমন আলোচনার জন্য একটি ভাল মধ্যস্থতাকারী পক্ষ ঠিক করতে হবে। এদিকে রিয়াদে বৈঠক চলাকালে বিরোধী পক্ষগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দেয় বলে জানা যাচ্ছে।
ইসলামপন্থী দল আহরার আল শাম জানিয়েছিল যে, তারা আলোচনা থেকে বেরিয়ে গেছে। ভিন্ন একটি বিদেশী বার্তাসংস্থার খবরে বলে হয়েছে, বৈঠক শেষে চুক্তিতে সব পক্ষই সই করেছে। সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের চার দশকের শাসন অবসানের লক্ষে সাড়ে চার বছর আগে শুরু হওয়া গণ আন্দোলনে ক্রমে গৃহযুদ্ধের রূপ নেয়। যুদ্ধে এ পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ১০ লাখের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এতে এখনও আসাদ বা বিদ্রোহী কোন পক্ষই বিশেষ সুবিধা করতে পারছে না। এ নিয়ে দু’পক্ষ আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পরস্পর মুখোমুখি আলোচনায় বসছে। এছাড়া এ বিষয়ে চলতি মাসের আরও পরের দিকে আসাদের দুই মিত্র রাশিয়া ও ইরানও আলোচনায় বসছে। এ আলোচনার ফল কি হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর নজর এখন সেদিকেও রয়েছে।