ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘সিনেমার বাইরেও গানটি আলোচনায় আসত’

এনআই বুলবুল

প্রকাশিত: ০০:২৮, ২০ জুলাই ২০২৩; আপডেট: ১৫:১৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

জনপ্রিয় সুরস্রষ্টা প্রিন্স মাহমুদ। ‘যদি ঐ হিমালয়’, ‘এ দেখা শেষ দেখা নয়’, ‘কেন মন নিয়ে এত দাও যন্ত্রণা’, ‘মা’, ‘বাংলাদেশ’ ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’, ও ‘মাটি হবো মাটি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরের কারিগর তিনি। সর্বশেষ তার সুরে ‘ঈশ্বর’ গানটি দারুণ সাড়া ফেলেছে। ঢালিউড কিং শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় এটি ব্যবহার হয়েছে। এ গান ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন -এনআই বুলবুল

 

‘প্রিয়তমা’ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হলেন কিভাবে?
আমি গেল রমজান ঈদের পর থেকে নতুন কিছু কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এরমধ্যে হিমেল আশরাফ একদিন ফোন দিয়ে গানটার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু এত কম সময়ে গান করার মতো পরিস্থিতিতে আমি ছিলাম না। হিমেল ফোনটা রেখে দিয়ে আবার কল দেয়। আমাকে দিয়েই সে গানটা করতে চায় জানায়। তারপর আরও বলে প্রিয়তমা সিনেমা আমার এক ছোট ভাইয়ের গল্পে নির্মাণ হচ্ছে। তখন আমি একটু নড়ে উঠলাম। সে সময় জানতে পারি ফারুক হোসেনের গল্পে প্রিয়তমা সিনেমা। ফারুক আমার খুব আদরের ও প্রিয় একজন। আমি ফারুকের মৃত্যুর পর অনেকদিন আফসেট ছিলাম। হিমেল ফারুকের কথা বলার পর তার সঙ্গের পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়তে থাকে। সত্যি বলতে, ফারুকের জন্যই এ সিনেমার গান করতে রাজি হয়েছি।


সুরের বাইরে আপনি নিজেই গান লেখেন। এ গানটি সোমেশ্বর অলির কথায় করার কারণ কি? 
হিমেল যখন গানটির দৃশ্যের কথা বলেছিল তখন আমি একটি সুর ও রিদম তৈরি করি। পুরো গানের দৃশ্যটা আমি কল্পনা করতে থাকি। তার ওপরই আমি সুর বসাই। আমাকে যখন লিরিকটা পাঠায় সত্যি বলতে তখন আমি এটি দেখিনি। আমার চিন্তায় ছিল ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’ বা অন্যরকম হাহাকারের কিছু একটা করব। এ রকমই আমি লিরিক চিন্তা করেছিলাম। তারপর যখন আমি লিরিক লিখতে বসবো তখন অলির লিরিকটা দেখি। সেখানে কিছু শব্দ আমার মতো পাই। আমি যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করি। তখন এ লিরিকেই গানটা করা হয়।


আপনার অনেক গানই দারুণ আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এ গানটির ক্ষেত্রে অনেকে বলেনÑ শাকিব খানের কারণে এত বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনি কি বলবেন? 
শাকিব খানের বিশাল একটা ভক্ত আছে এটা মিথ্যে না। তবে আমি জানি না গানটি শাকিবের কারণে এত বেশি জনপ্রিয় হয়েছে কিনা। আমি শুধু এটা বলতে পারি, এ গানটা অনেক গানের চেয়ে আলাদা একটা গান। সিনেমার বাইরেও এটা আলোচনায় আসত। সেটি হয়তো কম বা বেশি।


ঈশ্বর গানটি থেকে আপনার বড় প্রাপ্তি কি?
আমাদের একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র সংগীতপরিচালক খন্দকার নুরুল আলম সাহেব। তিনি অনেক লিজেন্ডদের নিয়ে কাজ করেছেন। তার সুরে অনেক কালজয়ী গানও আছে। তার পরিবারের সদস্যরা বলেছেন আমার এ গানটি শুনেই নাকি দীর্ঘ সময় পর তারা বাংলা সিনেমা দেখেছেন। এটি আমার জন্য বড় প্রাপ্তি মনে করছি।
নিয়মিত সিনেমায় গান করবেন?


আমি সব সময় সম্মানের জায়গাটাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যদি সঠিক সম্মান পেয়ে থাকি এবং একইসঙ্গে আমি যেভাবে কাজ করতে চাই তাতে কেউ সম্মতি দেয় তাহলে কাজ করতে আপত্তি নেই। সম্মান বিসর্জন দিয়ে কোনো কাজ করতে চাই না।
বতর্মানে ভিউ বাণিজ্যে অনেকে বলে আপনার গান আসছে না। আপনি এটিকে কিভাবে দেখছেন?


যারা এমন মন্তব্য করে তারা না জেনেই করে বলে আমি মনে করি। আমার ‘ভুবন ডাঙ্গা হাসি’ গানটি কি কোনো দিক থেকে পিছিয়ে আছে। এটি তো ভিউয়ের যুগেরই গান। এছাড়া ভিউ দিয়ে তো গানের মানদ- বিচার করা যায় না। 


রিয়াদের মতো নতুন শিল্পীকে নিয়ে কেন চ্যালেঞ্জ নিলেন?
আমি বাচ্চু ভাই, জেমস ভাইদের পাশাপাশি সব সময় নতুন শিল্পীদের নিয়েও কাজ করেছি। মাহাদি, রুমিসহ অনেকের কণ্ঠে আমার জনপ্রিয় গান আছে। আগে যেমন নতুনদের নিয়ে কাজ করেছি তেমনি এখনো করছি। তবে এখন নতুনদের সংখ্যা একটু বেশি।


গান নিয়ে আপনার দীর্ঘ জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন?
দীর্ঘ জার্নিতে অনেক কিছু দেখার সুযোগ হয়েছে। অনেক প্রিয় মানুষদের সংস্পর্শে এসেছি। যেটি আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। অনেক প্রতিকূল সময়ও গেছে। তবে এ সময়ে আমি বলতে চাই, ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি ঈদে আমার সুরে গান প্রকাশ হচ্ছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এটি শুধু আমার শ্রোতাদের কারণেই সম্ভব হয়েছে। সব থেকে ভালো কথা হচ্ছে, আগামী বছর আমার ক্যারিয়ারের তিন দর্শক হবে। এই লম্বা সময় গান করতে পারছি এটিও আমার জন্য কম কিছু নয়।

×