ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

একদিনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জের  সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৫৩ পয়েন্ট

ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ার বাজার 

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১ আগস্ট ২০২২; আপডেট: ১১:৫৯, ১ আগস্ট ২০২২

ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ার বাজার 

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ 

করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ডলারের দর ব্যাপক ওঠানামার কারণে গত কয়েকদিন ধরে আতঙ্কিতভাবে দর কমছিল শেয়ারবাজারে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগকারীদের মূলধন রক্ষায় পাঁচদিনের সমন্বয় মূল্যের গড়কে হিসাব করে ভিত্তি ধরে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়। বিএসইসির ইতিবাচক সিদ্ধান্তের পরই শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল শেয়ারবাজার। 

বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ার কারণে একদিনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জের  সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৫৩ পয়েন্ট। সব ধরনের সূচক বেড়েছে আড়াই শতাংশের বেশি। আর বাজার মূলধন বাড়ল একদিনে ১০ হাজার কোটি টাকা।

ঈদ পরবর্তী শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দিলে বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ওই বৈঠকে বড় বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। তাদের শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রির চাপ বেশি থাকায় তবুও কাজ হচ্ছিল না। কোম্পানির শেয়ারদর আর কমতে পারবে না, এমন সিদ্ধান্তের পরই বড় ধরনের উত্থান ঘটল।

রবিবার এক অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. শিবলী রূবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, বিএসইসিও দর কমার ক্ষেত্রে দুই শতাংশ সার্কিট ব্রেকার এবং ফ্লোর প্রাইস দিতে চায় না। কিন্তু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষার জন্য দিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি। উন্নত দেশে শিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমনটি করা লাগে না।

শিবলী রূবাইয়াত উল ইসলাম আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ট্রেজারি বন্ড ও সিকিউরিটিজ লেনদেন হবে। এগুলো লেনদেন শুরু হলে জিডিপিতে শেয়ারবাজারের অবদান বেড়ে যাবে। তখন বাজারে গতি ফিরবে। কারণ সরকারি বন্ডগুলোর আকার অনেক বড়। শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে প্রতিটি সিকিউরিটিজের দাম সমন্বয় করায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। ফলে লেনদেন শুরুর আগেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে প্রায় ৫০ পয়েন্ট। আর সকাল ১০ টায় লেনদেন শুরু হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পালে আরও হাওয়া লাগে। এতে লেনদেনের ১৫ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১০০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে দাম বাড়ার প্রবণতা বাড়তে থাকায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমেছে সাতটির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৫৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকেরও। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার কারণে একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন ১০ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা বেড়ে গেছে। বাজার মূলধন বাড়ায় অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সিকিউরিটিজের দাম সম্মেলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়ে গেছে। অবশ্য এর আগে টানা পতনে মাত্র ১৩ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলদন ২৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা কমে যায়।

মূল্যসূচকের বড় উত্থান হওয়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১২৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৬৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে চারটির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
 

এসআর

×