ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বৈদেশিক সহায়তা ছাড় কমছে

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

বৈদেশিক সহায়তা ছাড় কমছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রথম চার মাসে বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ে পিছিয়ে পড়েছে সরকার। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রুত অর্থ থেকে ছাড় হয়েছে ১৩৩ কোটি ডলার। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ কোটি ডলার কম। চলতি অর্থবছরে সরকার সব দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৭১৭ কোটি ডলার ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১৩ কোটি ডলার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন বলেন, গত অর্থবছরের অক্টোবর মাসে জাপান মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বড় ধরনের অর্থ ছাড় হয়েছিল। মূলত জাপানের ওই ছাড়ের কারণে গত অর্থবছরের প্রথমদিকেই অর্থছাড়ে বড় ধরনের একটা অগ্রগতি হয়েছিল। তিনি বলেন, এবারও এরকম মেগা প্রকল্পের বড় ধরনের ছাড় শুরু হলেই বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের একটা উল্লম্ফন হবে। তখন গত বছরকে ছাড়িয়ে যাবে। ইআরডির সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ছাড় হয়েছে ১৩৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে ১২৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলার আর অনুদান হিসেবে ছাড় হয়েছে ৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এর আগে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে ১৪৬ কোটি ডলার ছাড় হয়েছিল। এরমধ্যে ঋণ হিসেবে ১৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার আর অনুদান হিসেবে ১০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার ছাড় হয়। এবার অক্টোবর মাস পর্যন্ত দাতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি এসময়ে ছাড় করে ৩১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। এরপর রয়েছে বিশ্ব ব্যাংক ৩০ কোটি ডলার, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) ২৭ কোটি ডলার এবং রাশিয়া ৬ কোটি ডলার। অর্থ ছাড়ের সঙ্গে এই অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতিও কমেছে। এ চার মাসে সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৩৬১ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে ঋণের হিসেবে ৩১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার, অনুদান হিসেবে ৫০ কোটি ৬১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে দাতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছিল ৫৬৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫৫৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ঋণ এবং ৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার অনুদান হিসেবে প্রতিশ্রুতি ছিল। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে দাতাদের কাছে পুঞ্জীভূত পাওনা থেকে ৫২ কোটি ৪২ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে সুদ হিসেবে ১৩ কোটি ডলার এবং আসল পরিশোধ করেছে ৩৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে সরকার সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট ৪৫ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল। এতে আসলের পরিমাণ ছিল ৩৬ লাখ ডলার। এছাড়া সুদ হিসাবে পরিশোধ হয়েছে ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
×