ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নদী ভাঙ্গন রোধে ১ হাজার ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০২:০৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নদী ভাঙ্গন রোধে ১ হাজার ৭৭  কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রকল্প

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার নদী ভাঙ্গন রোধে ১ হাজার ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এছাড়া ৫৪৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া ও ডিএপি সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঢাকার উত্তরার আশকোনায় নির্মাণ হচ্ছে রাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেড কোয়ার্টার্স কমপ্লেক্স। এ জন্য ব্যয় হবে ৪৩৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এগুলোসহ ২২টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়রে সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নদীভাঙ্গন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিডেট। শিগগির এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ণ বোর্ডের বাস্তবায়ণাধীন ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৮ দশমিক ৯০ কিলোমটিার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ ৯ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ড্রেজিং, ০.০৮৯ কিলোমিটার ইন্ড টার্মিনেশন এবং ৮টি আরসিসি পাকা ঘাট নির্মাণ কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদ দেয়া হয়েছে। এর আগে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রীসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় নদী ভাঙ্গন বিষয়ে পুর্বপ্রস্তুতি না নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, গত কিছুদিন যাবত শরিয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নদীভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। শরীয়তপুরে এখনও অব্যাহত রয়েছে পদ্মার ভাঙন। গত দেড় বছরে পদ্মার ভাঙনে সেখানে নিঃস্ব হয়েছে ৫ হাজার ৮১টি পরিবার। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ৮ হাজার পরিবার। এসব এলাকায় সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। এদিকে, ৫৪৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া ও ডিএপি সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্য ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার সরবরাহের কাজ পেয়েছে মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্স লিমিটেড। বাকী ২৫ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার জি টু জি (সরকার টু সরকার) ভিত্তিতে আমাদনী করা হবে। এ সংক্রান্ত তিনটি ক্রয়ের প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জানান, কোটেশন ইনকুয়েরির বিপরীতে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়া সার চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২২৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সার সরবরাহ করবে মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্স লিমিটেড। অতিরিক্ত সচিব বলেন, আর ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্রিল্ড ইউরিয়া সার মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানির অন্য একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি। ২২৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সারও সরবরাহ করবে মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্স লিমিটেড। এছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ওসিপি, মরক্কো ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীন প্রথম লটের ২৫ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২৫ হাজার মেট্রিকটন সার আমদানিতে সরকারের ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া ঢাকার উত্তরার আশকোনায় নির্মাণ হচ্ছে রাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেড কোয়ার্টার্স কমপ্লেক্স। এ জন্য ব্যয় হবে ৪৩৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ কমপ্লেক্স জয়েন ভেঞ্চারে নির্মাণের কাজ পেয়েছে জিকেবিপিএল এবং এমএসসিএল লিমিডেট। এ সংক্রান্ত একটি ক্রয়ের প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নাসিমা বেগম বলেন, বৈঠকে রাজস্ব বোর্ড ভবন নির্মানের একটি সংশোধীত প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। এটি হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন সংস্থা জতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জাতীয় রাজস্ব ভবন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ‘কনস্ট্রাকশন অব ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ বিল্ডিং’ শীর্ষক কাজের ক্রয় প্রস্তাব। এ কাজে ব্যায় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। জয়েন ভেঞ্চারে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জিকেবিপিএল এবং পায়েল কনস্ট্রাকশন লিমিডেট।
×