ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ

জলবায়ু খাতে ৫ বছরে ৫৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

জলবায়ু খাতে ৫ বছরে ৫৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে জাতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনা (কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান-সিআইপি) প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরে (২০১৬-২০২১) এ খাতে আরও সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকা। সরকারী-বেসরকারী অর্থায়ন, দাতা সংস্থার অনুদান এবং জলবায়ু পরির্বতনের ভিকটিম দেশ হিসেবে প্রাপ্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণের অর্থ হতে এ বিনিয়োগ করা হবে। এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত অন্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টিতে বাংলাদেশ সোচ্চার ভূমিকা রাখবে। বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক জাতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনার (সিআইপি)’ আনুষ্ঠানিক প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সচিব ইশতিয়ার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর জেনিনা জেরুজালস্কি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আবাসিক প্রতিনিধি ডেভিড ডুলান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে পরিবেশগত সুশাসন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার মতো খাতগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় বিনিয়োগ খুবই কম। এ কারণে বিশাল উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে। ইউএসএআইডির অর্থায়নে এবং এফএওর কারিগরি সহায়তায় পরিকল্পনাটি তৈরি করেছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পরিবেশ কমিটি গত ৬ আগস্ট পরিকল্পনাটিতে অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে পরিবেশ বন ও জলবায়ু খাতে মোট দরকার হবে ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) ১৭০টি প্রকল্প আছে, যারা কোন না কোনভাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে অবদান রাখবে। এ সব প্রকল্পে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাকি আরও ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। সিআইপির খরচ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মোট চারটি খাতে ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। মোট বিনিয়োগের প্রায় ৪২ শতাংশ অর্থ ( ৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন) ব্যয় হবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩২ শতাংশ অর্থ (৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন) ব্যয় হবে দূষণ রোধে। পরিবেশ খাতে সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে ২১ শতাংশ বা ২ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এছাড়া পরিবেশগত সুশাসনের জন্য ব্যয় হবে ৫ শতাংশ অর্থ (শূন্য দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার)। উল্লেখিত খাতগুলোতে বর্তমান বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগ ঘাটতি কত তাও সিআইপিতে তুলে ধরা হয়েছে। পরিবেশ সুশাসন খাতে বর্তমানে ব্যয় হচ্ছে মাত্র শূন্য দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগের পরিমাণ বর্তমানে ১ বিলিয়নের চেয়েও কম, যার পরিমাণ শূন্য দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। দূষণ রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বর্তমানে ব্যয় হচ্ছে যথাক্রমে ১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার এবং ২ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে দেশের যে সামগ্রিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে, তার বাস্তবায়ন পরিকল্পনা হিসেবে এই সিআইপি ভূমিকা রাখবে।
×