ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুটি মেশিন পাল্টে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাসের চিত্র

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

দুটি মেশিন পাল্টে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাসের চিত্র

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাত্র দুটি মেশিন পাল্টে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের খোলা পণ্য খালাসের পুরো কার্যক্রম। আগে যেখানে ৪০ হাজার টনের একটি বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগত এখন মাত্র ৩ দিনে জাহাজ খালাস করছে যন্ত্র ২টি। সক্ষমতা ও গতিশীলতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে ১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বন্দরে চালু হয়েছে নিউমেটিক কনভেয়ার ও অটোমেটিক ব্যাগিং নামের এই সিস্টেম। লাইটারেজ শ্রমিকদের ঘনঘন ধর্মঘট আর নানা আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যাহত হয় পণ্য খালাস কার্যক্রম। এতে দীর্ঘদিন ধরে পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরে অবস্থানের কারণে আমদানি-রফতানিকারকের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতো বন্দরও। এমন বাস্তবতায় খালাসে গতি আনতে কানাডা ও বেলজিয়াম থেকে আনা হয়েছে ভোগ্যপণ্য খালাসের দুটি অত্যাধুনিক যন্ত্র। জাহাজ থেকে খোলা পণ্য সাকিং করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিউমেটিক কনভেয়ার যন্ত্রের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে ব্যাগিং মেশিনে। পরে সেখান থেকে প্যাকিং হয়ে বেল্টের সাহায্যে বস্তাবন্দী পণ্য উঠে যাচ্ছে ট্রাকে। মাত্র কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে নতুন এই পদ্ধতিতে ঘণ্টায় ১৭০ টন খোলা পণ্য খালাস করছে যন্ত্র দুটি। আর মাত্র ৫ মিনিটে বোঝাই হচ্ছে এক একটি ট্রাক। যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়তাকিয়া কন্সট্রাকশন কোম্পানি নির্বাহী পরিচালক বাধন সাহা বলেন, যেখানে একটি জাহাজ থেকে পণ্য সরাতে ১৫/১৬ দিন সময় লাগত আর এখন সেটি ৫/৬ দিনের মধ্যে খালি হয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন, নতুন এই প্রক্রিয়ার কারণে কমে আসবে বন্দরে বড় জাহাজের গড় অবস্থান। এছাড়া কম সময় ও খরচের পাশাপাশি গতি আসতে শুরু করেছে বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রমে। চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বলেন, খাদ্য শস্যবাহী জাহাজ থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টনের মাল খালাস করতে সময় লাগাত ১৫ থেকে ১৬ দিন। আর এখন এই যন্ত্রের মাধ্যমে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে তা খালাস করতে পারব। এটিকে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও বন্দরের উন্নয়নে বড় ধাপ বলে মনে করেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি মাহবুবুল আলম। লয়েডসের তথ্য মতে, সক্ষমতা বিবেচনায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান বিশ্বে এখন ৭৬তম। নতুন এ পণ্য খালাস পদ্ধতির কারণে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম বন্দর এমনটিই আশা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
×