স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারীতে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগের শিকার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের ও হতদরিদ্র মানুষেরা। যান চলাচল ও দৈনন্দিন কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সব মিলিয়ে জবুথবু হয়ে পড়েছে নীলফামারী সহ পুরো উত্তর জনপদ।গত কয়েক দিন যাবত এই অঞ্চলে বিরাজ করছে শীতের প্রবল আবহ। প্রায় সারাদিনই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। সেইসাথে প্রবাহিত হচ্ছে মৃদু হিমেল বাতাস। দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও ২/১ ঘণ্টার মধ্যেই তা উধাও হয়ে যায়। ফলে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে ঠান্ডার প্রকোপ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। যা সকালেও বহাল থাকায় বেহাল দশায় প্রাণীকুল।
আজ বুধবার এই পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে। কুয়াশা ও বাতাসের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গড় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রিতে। ফলে কুঁকড়ে পড়েছে পরিবেশ ও জীবন যাপন। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে মাত্র ২ গজ দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছেনা। দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় রেলপথ ও সড়কে অল্পসংখ্যক যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের না হওয়ায় রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্টেশন বাস টার্মিনালসহ জনসমাগমের স্থানগুলোতে লোকজনের উপস্থিতিও কম। সরকারি বেসরকারি অফিসে কর্মজীবীরা এলেও কাজেকর্মে চলছে স্থবিরতা। জীবিকার তাগিদে নিু আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ বের হলেও কাজ না পেয়ে অনেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এ অবস্থায় এ জেলার দুই উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন চলছে। কনকনে ঠান্ডায় ভোটাররা ভোট দিতে এসে কষ্ঠ ভোগ করছে।
এছাড়া রিকশা-ভ্যান চালক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিকরা পথে ও মাঠে নেমে সামান্য কাজ করেই শীতে কাবু হয়ে পড়ছে। হিম শীতল আবহাওয়ায় মূহুর্তেই জমে যাচ্ছে শরীর। একাধিক গরম কাপড় গায়ে দিয়েও শীত নিবারণ করা যাচ্ছেনা। তাই কাজ ছেড়ে হাত গুটিয়ে একটু তাপের জন্য ছুটছে হচ্ছে আগুনের আঁচ পেতে।সামর্থ্যবানরা শীতবস্ত্র পরে আগুন তাপিয়ে, ঘরে থেকে শীত থেকে বাঁচতে পারলেও হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা খুবই করুণ। তারা না পারছে শীত নিবারণ করতে, না পারছে খাবার সংগ্রহ করতে। ফলে দূর্বিষহ পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে। তাই তাদের মধ্যে শীতবস্ত্রের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে। দুপুর ২ টা পর্যন্ত সর্বনি¤œ গড় তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাঝারি শৈত্য প্রবাহের কারণে এমন পরিস্থিতি। আরও ২/৩ দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে। এরপর তাপমাত্রা বাড়বে। তবে চলতি মাসেই আরও একটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: