ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নড়িয়ায় ৫০ বছরের ভাঙ্গন এলাকা এখন পর্যটন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

নড়িয়ায় ৫০ বছরের ভাঙ্গন এলাকা এখন পর্যটন কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর ॥ শরীয়তপুরের নড়িয়ার ৫০বছরের নদী ভাঙ্গন এলাকা বাঁশতলা, মুলফৎগঞ্জ, কেদারপুর, চন্ডিপুর, সুরেশ্বরে ভাঙ্গনরোধ হয়ে সেখানে গড়ে ওঠেছে সুরম্য অট্রালিকা ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এক সময়ের ভাঙ্গন এলাকা এখন পরিণত হয়েছে নিরাপদ বসবাসের স্থান হিসেবে। জানা গেছে, শুধু ২০১৮ সালেই এসব এলাকায় সাড়ে ৫ হাজার পরিবার নদী ভাঙ্গার শিকার হয়েছিল। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে পাকা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, হাট-বাজার, গাছপালা, ফসলী জমি, মসজিদ-মন্দির, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন আতংকে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। বর্ষা এলেই পদ্মার পাড়ে ছিল মানুষের ভাঙ্গন আতংক, আর্তনাদ ও হাহাকার। প্রমত্তা পদ্মার ভাঙ্গা গড়ার সাথে দিন রাত লড়াই করে যারা কোন রকমে বেঁচে থাকার চিন্তা করত, সেখানে ভাঙ্গনরোধ হয়ে এখন পরিণত হয়েছে ভ্রমন পিপাসুদের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। প্রতিদিনই শত শত লোক নদীর পাড়ে ঘুরতে আসছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার শুরুতেই শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম নড়িয়া ও সখিপুরের উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫০ বছরের নদী ভাঙ্গনরোধসহ উন্নয়নের মেঘা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের উদ্যোগে নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্প নামে একটি মেঘা প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে নড়িয়ায়। ১ হাজার ৪শ’ ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য সিসি ব্লক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে নদীর তীরবর্তী ১০টি স্থানে। ফলে গত ২ বছর আগেও যেখানে শত শত লোক পদ্মার ভাঙ্গনে ফসলী জমি, গাছপালা ও ঘরবাড়ি হারিয়ে যারা নিঃস্ব হয়েছে, সেখানে এ বছর একটি বাড়িও ভাঙ্গেনি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। প্রমত্তা পদ্মার ভাঙ্গা-গড়ার আতংকের এলাকায় এখন ভাঙ্গনরোধ হয়ে সেখানে গড়ে উঠছে সুরম্য অট্রালিকা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা প্রতিষ্ঠান। গত ৫০ বছর যাবত যেখানে পদ্মার ভাঙ্গাগড়ার সাথে মানুষ লড়াই করে কোন রকম টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল, সেখানে আজ ভাঙন রোধ হওয়ায় মানুষ নিরাপদে বসবাস করছে। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পরিণত হয়েছে আনন্দের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। পদ্মার ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্ষা এলেই এখানে মানুষের যে আর্তনাত, যে আতংক ছিল, সে বিষয়গুলো এখন আর নেই। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকগুলো বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেসব লোকগুলোকে গৃহায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে আশ্রয় দিয়েছেন। পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদ্মার ডানতীর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কারণে এ বছর নড়িয়াতে একটি বাড়িও ভাঙ্গেনি। প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন। আগামীতে ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়িত হলে সারাদেশে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গনরোধ সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।
×