ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জনকন্ঠ সংবাদ প্রকাশ ॥ ঘর উপহার পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ে

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২০ জুন ২০২১

জনকন্ঠ সংবাদ প্রকাশ ॥ ঘর উপহার পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা ,হবিগঞ্জ ॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দুইটি ঘর উপহার পেয়েছেন হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব আলীর দুই মেয়ে। রবিবার (২০ জুন) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল ও ইউএনও মোঃ মিনহাজুল ইসলামের কাছ থেকে ঘরের দলিল গ্রহণ করেন মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব আলীর দুই মেয়ে রোকেয়া খাতুন (২৮) ও সমতা আক্তার (২৫)। এর আগে ১৮ জুন দৈনিক জনকন্ঠে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়েদের মানবেতর জীবন’ শিরোনামে একটি মানবিক সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি ইউএনও মোঃ মিনহাজুল ইসলামের দৃষ্টিগোচর হয়। এ প্রেক্ষিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তিনি জরুরীভিত্তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণে দুইটি ঘর বরাদ্দ দেন। ঘরের দলিল পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন দুই বোন রোকেয়া খাতুন ও সমতা আক্তার। একই সাথে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউএনও প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তারা বলেন, আমাদের পিতা বেঁচে নেই। ধনসম্পদ রেখে যেতে পারেননি। সেই জন্মের পর থেকে রেলওয়ের সরকারী জমিতে বসবাস করে আসছিলাম। কেউ তেমন একটা খোঁজ খবর নেয়নি। আমাদের জীবনের প্রতি সম্মান জানিয়ে ইউএনও মহোদয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দুইটি ঘর দিয়েছেন। এখন থেকে আমরা নিজের ঘরে বসবাস করতে পারব। অত্যন্ত ভাল লাগছে। সেই সাথে আমাদের মানবেতর জীবন নিয়ে দৈনিক জনকন্ঠে মানবিক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এজন্য জনকন্ঠ ও প্রতিবেদককেও ধন্যবাদ। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল বলেন, মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দুইটি ঘর বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ে পেয়েছেন। তাতে অত্যন্ত ভাল লাগছে। তারা শায়েস্তাগঞ্জ দাউদনগর রেলওয়ে গেইট ঘরের পেছনে বধ্যভূমির কাছে সরকারী জমির ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। এবার নিজেদের নামে পাওয়া পাকা ঘরে বসবাস করবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মিনহাজুল ইসলাম বলেন, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব আলীর দুই মেয়ের অবস্থা জেনে পদক্ষেপ নিয়েছি। তাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উপহার ঘর দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে আর্থিক সহযোগীতার চেষ্টা করা হবে। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ের কথা শুনে অনেক খারাপ লাগছিল। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদেরকে সহায়তা করার জন্য চেয়ারম্যান ও ইউএনও মহোদয়কে অনুরোধ করেছিলাম। মেয়েরা ঘর পেয়েছে বলে, ভাল লাগছে। প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ ছিল, বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে রোকেয়া খাতুনের বিয়ে হয়েছিল চুনারুঘাটের পঞ্চাশের আব্দুস ছালামের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে স্বামী তাকে নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্য করে প্রায় ১০ বছর স্বামীর ঘর করেছেন। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়েছে। স্বামী আরেকটি বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। তাই বাধ্য হয়ে তাকে রেলওয়ের সরকারি জমিতে বাবার ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে। ওই ঝুপড়ির অপর একটি কক্ষে বাস করেন রোকেয়ার ছোট বোন সমতা আক্তার। রোকেয়ার মতো একই অবস্থা তারও। বিয়ের প্রায় ৯ বছর পর স্বামী ফরহাদ মিয়া আরেকটি বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এক ছেলে-এক মেয়ের মা সমতা আক্তার। ঘর নেই, সংসার নেই। দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে সন্তানদের নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন দুই বোন। খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।
×