ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালের রাতে অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ৫ মে ২০২১

বরিশালের রাতে অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ কোনধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই রাতে যাত্রী বোঝাই করে অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলছে বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌপথে স্পিডবোট। পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে স্পিডবোট চালকের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের পাশাপাশি যাত্রী নিরাপত্তা উপেক্ষা করছেন চালকরা। ফলে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন স্পিডবোটের যাত্রীরা। বিশেষ করে রাতে এসব স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে রাতের বেলায়ও যাত্রীনিয়ে দ্রুতগতিতে চলাচল করা হচ্ছে। স্পিডবোট দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে না থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও স্পিডবোট মালিকদের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ গত কয়েকদিন পূর্বে রাতে সাহেবেরহাট এলাকায় দুটি স্পিডবোটের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এরপূর্বে গত বছরের ৩১ আগস্ট রাতে হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীতে দুটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। ওই দুর্ঘটনায় মামলা কিংবা গ্রেফতার পর্যন্ত হয়নি কেউ। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট এলাকায় দুটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে মা ও মেয়ে নিহত হন। ওই ঘটনায় দুই চিকিৎসক গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনার পরেরদিন বন্দর থানায় পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করার পর নগরীর ডিসিঘাট স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি কালাম শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলেন। ডিসিঘাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বড় স্পিডবোটে কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ১২ থেকে ১৪ জন যাত্রী তোলা হচ্ছে। এতে কোনো যাত্রী আপত্তি করলে চালক বা মালিক পক্ষের লোকজন তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করছেন। বোটে রাখা হয় আট থেকে ১০টি লাইফ জ্যাকেট। যার মন চাইছে তারা পরছে। এতে নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। স্পিডবোটের সাথে নেই কোন বয়া। তবে বরিশাল থেকে ভোলা পর্যন্ত জনপ্রতি ২৫০ টাকা ভাড়া থাকলেও প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে বর্তমানে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ডিসিঘাট স্পিডবোট মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বরিশালের ডিসিঘাট থেকে ভোলার ভেদুরিয়া, বরিশালের লাহারহাট থেকে ভেদুরিয়া, বরিশালের বুখাইনগর থেকে মেহেন্দিগঞ্জসহ বিভিন্ন নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হয় বরিশাল-ভোলা (ভেদুরিয়া) এবং লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটের যাত্রীদের। বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন। পাশাপাশি মানুষ সচেতন না হলে এসব দুর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব হবেনা। তিনি আরও বলেন, মানুষ রাতে না উঠলে স্পিডবোট চলবে না। সচেতন বরিশালবাসী রাতের আঁধারে অধিক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা বেপরোয়া স্পিডবোর্ড নিয়ে বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
×