ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তা বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ১৫ এপ্রিল ২০২১

করোনা মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তা বিশ্বব্যাংকের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলাসহ ভবিষ্যতের দুর্যোগ সহনশীল ব্যবস্থা তৈরিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তিনটি অর্থায়ন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার। তিনটি চুক্তির আওতায় টিকাদানসহ নানা কর্মসূচিতে মোট ১ বিলিয়ন (১০৪.৪) ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে দাতা সংস্থাটি। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থার বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন চুক্তিগুলোয় স্বাক্ষর করেন। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) ঋণের অর্থ দেবে, যা পরিশোধে পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর সময় পাবে বাংলাদেশ। এছাড়া, বিশ্বব্যাংকের দেওয়া অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলারের অর্থায়নে কোভিড-১৯ জরুরী ব্যবস্থাপনা ও মহামারি প্রস্তুতিকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে ৫ কোটি নাগরিককে টিকাদানের মাধ্যমে সুরক্ষা দিতে পারবে বাংলাদেশ। বুধবার বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। ওয়াশিংটন ভিত্তিক দাতা গোষ্ঠীটি জানায়, এই অর্থে বাংলাদেশ সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ, সংরক্ষণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, বিতরণ ও টিকদান কর্মসূচিতে সহায়তা পাবে। পাশাপাশি প্রকল্পটির মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে কোভিড শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করা হবে, বাড়তি এই সক্ষমতার ফলে ভবিষ্যতে জরুরী যেকোনো জনস্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবিলায় প্রস্ততি থাকবে। বিশ্বব্যাংক তাদের প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এন্টারপ্রিনিউরশিপ (প্রাইড) প্রকল্পের আওতায় আরও ৫০ কোটি ডলার দিচ্ছে, যা সামাজিক ও পরিবেশগত মান নিশ্চিতের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, সফটওয়্যার পার্কে দুইশ' কোটি ডলারের সরাসরি বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে। বিশ্বব্যাংক জানায়, কোভিড-১৯ মহামারিতে জরুরি প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করে সংস্থাটি। এ অর্থ ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে টিকা দিতে সহায়তা করবে। এছাড়া এই অর্থ সরকারকে টিকা সংগ্রহ, স্টোরেজ সুবিধা সম্প্রসারণ এবং টিকা বিতরণে খরচ করা হবে। প্রকল্পটি কোভিড শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়ক হবে। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মের্সি টেম্বন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিটি বিশ্বজুড়ে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। এখনও বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জগুলো আর্থিক এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে ভালোভাবে মোকাবিলা করছে। তবে টিকা নিশ্চিত, দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নির্ভর করছে। তিনি বলেন, এ প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে টিকা দিতে সহায়তা করবে। এছাড়া বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে প্রত্যক্ষ বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবং প্রসারিত করার পাশাপাশি ই-জিপি ব্যবস্থাকে উন্নীত করতে সহায়তা করবে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিরসরাই-ফেনীতে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর এবং ঢাকার জনতা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে প্রথম ডিজিটাল উদ্যোক্তা কেন্দ্র স্থাপন এবং এই ভবনকে সবুজে রূপান্তরিত করতে প্রকল্পটি সহায়তা করবে। এর ফলে আইটি খাতে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার মাধ্যমে প্রকল্পটি অর্থনীতিকে কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে প্রত্যাবর্তন করতে সহায়তা করবে।
×