ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান ওয়ার্কার্স পার্টির

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান ওয়ার্কার্স পার্টির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকৃতি বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে সেমিনার হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলার ঘোষণা’ দিবসের ৫১ বছর পূর্তিতে ওই আলোচনা সভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে এদেশের বামপন্থীরাও কেবল গুরত্বপূর্ণ অবদানই রাখেননি, অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকাও পালন করেছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিল উল্লেখ করে ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে বামপন্থীরাই আগুয়ান ভূমিকা পালন করেছিলেন। সেই সময় সামরিক শাসনের মধ্যেই ’৭০-এর ২২ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন বামপন্থীরা। ওই সমাবেশের বক্তাদের ৭ বছর ও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, কেবল তাই নয়, তার আগ থেকে মওলানা ভাসানী ও বামপন্থীরা এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রপাতে অগ্রগামী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধেও বামপন্থীরা অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে এখন ইতিহাসের বামপন্থীদের অস্বীকার কেবল নয়, অনেক ক্ষেত্রে অসত্য তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। মেনন আরও বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে মওলানা ভাসানী ও বামপন্থীদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার মধ্য দিয়েই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালন সার্থক হয়ে উঠবে। আগামী প্রজন্ম জানবে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস। ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা’-শীর্ষক ওই আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেই এগিয়ে যাবে ওয়ার্কার্স পার্টি। এক্ষেত্রে কোন ধরনের দ্বিধা, সংশয়, কোন আপোসকামিতার প্রশ্রয় ওয়ার্কার্স পার্টি দিবে না। সংসদে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তন করে প্রচারের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে বাদশা আরও বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে কে স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তন করল, কে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র বাদ দিল ওয়ার্কার্স পার্টি তার জবাব চায়। আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য বাদ দিয়ে সামনে এগোনো যাবে না। পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হাসান মানিকের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে ভারতের কমিউনিস্ট পাটি (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড গৌতম দাস মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের শহিদদের এবং মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে সিপিএম প্রথম দাবি উত্থাপন করেছিল। কেবল দাবিই নয়, ধর্মঘট হরতালও করেছে। ইন্দিরা গান্ধীর কাছে আমাদের পার্টি দাবি করে, বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এছাড়া আমরা আমাদের পার্টির সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি। সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক সামসুল হুদা, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি আবুল হোসাইন প্রমুখ। শুরুতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনা করেন ‘গণ সাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।
×