ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আরেক দফা শৈত্যপ্রবাহ আগামী সপ্তাহে

প্রকাশিত: ২২:৪১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

আরেক দফা শৈত্যপ্রবাহ আগামী সপ্তাহে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সপ্তাহেই আরও এক দফা শৈত্যপ্রবাহ আসছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে চলমান শৈত্যপ্রবাহ বর্তমানে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। দু-এক বেলার মধ্যে তা কেটে যাবে। এই সময়ে দিনের তাপমাত্রা আরও একটু বাড়তে পারে। ফলে শীতের তীব্রতাও কমবে। তবে আগামী সপ্তাহের রবি অথবা সোমবার থেকে আরও এক দফায় শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। তখন তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীত বাড়াবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এদিকে শীতের মাত্রা কমে আসায় শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগও কিছুটা কমেছে। এবারের শীত মৌসুমে প্রথম দফায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয় গত শুক্রবার থেকে। শনিবার দেশের তাপমাত্রা কমে ৬.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে চলে আসে। মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় রূপ নেয় শৈত্যপ্রবাহ। কিন্তু শুরুর একদিন পরই তা অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। বর্তমানে দেশের চার অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। আগামী দু-একদিন এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। তবে এই সময় দেশের কোথাও কিছুটা শীত থাকলেও অন্যত্র তাপমাত্রা আরও একটিু বাড়বে। শীতের মাত্রাও কমবে। তবে শীত কমে যাওয়ার কারণে দেশের নদী অববাহিকা অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশার বেড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশায় এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার কুয়াশা বাড়ছে। তবে শৈত্যপ্রবাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে কুয়াশার পরিমাণ বাড়ছে। আবহাওয়া অফিস জানায় নদী অববাহিকা অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা বেড়ে গেছে। তবে কুয়াশার ঘনত্ব খুব বাড়েনি। ফলে যান চলাচলে কোন প্রভাব পড়ছে না। জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, শৈত্যপ্রবাহের হাইপ্রেসার সিস্টেম কমে যাওয়ায় চলমান শৈত্যপ্রবাহ অনেকটাই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে যেসব অঞ্চল থেকে শৈত্যপ্রবাহ আসে কাশ্মীর উত্তর প্রদেশসহ উত্তরের শৈত্যপ্রবাহ দুর্বল অবস্থায় থাকায় দেশে এর প্রভাব কম। ফলে কয়েকদিনের ব্যবধানের তা দুর্বল হয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে তিনি জানান, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু কিছু জেলায় তাপমাত্রা অনেক কম থাকায় শীতের মাত্রা বেশি রয়েছে। তিনি বলেন দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৭ অথবা ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তবে দ্বিতীয় দফায়ও তা জোরালো হবে না। চলমান শৈত্যপ্রবাহের মতোই তা কয়েদিন স্থায়ী হতে পারে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানায়, আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র মাঝারি থেকে হালকা মাত্রা কুয়াশা থাকবে। শ্রীমঙ্গল, রাজারহাট, তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজও তা অব্যাহত থাকতে পারে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ ও তার আশপাশে এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। পঞ্চগড় ॥ তেঁতুলিয়ায় বেড়েছে এক দশমিক দুই ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এতে পঞ্চগড়ে শীত কমলেও, বেড়েছে কুয়াশা। মধ্যরাত থেকে আকাশ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন। বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত ছিল কুয়াশায় ঢাকা আকাশ। এরপর ঝলমলে রোদের দেখা মেলায় উষ্ণতা বাড়ে। ফলে, শীতের তীব্রতাও কমে যায়। কনকনে ঠাণ্ডা কমে আসায় শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। এদিন সকালে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা মঙ্গলবার ছিল ৭ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সূত্রমতে, বুধবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায়। গত গত কয়েকদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইলেও ৭-এর নিচে তাপমাত্রা নামেনি। সূত্রমতে, হিমালয়ের অতি সন্নিকটে পঞ্চগড় জেলার অবস্থান হওয়ায় প্রতিবছর এ জেলায় মধ্য নবেম্বর থেকে শীত শুরু হয়। মধ্য ডিসেম্বর থেকে পুরো জানুয়ারি মাসজুড়ে থাকে শীত। তবে কখনও মৃদু, কখনও মাঝারি এবং কখনও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছরই এভাবে তাপমাত্রা ওঠানামা করে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও তা অনেকটা কেটে গেছে। কুয়াশার পরিমাণ বাড়ায় শীতের তীব্রতা কমে গেছে বলে তিনি জানান।
×