ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

এক্সিম ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার পাচ্ছেন হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদ

প্রকাশিত: ২৩:০০, ১ নভেম্বর ২০২০

এক্সিম ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার পাচ্ছেন হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২০’ পাচ্ছেন দুজন লেখক। এরা হলেন সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য প্রবীণ কথাশিল্পী হাসনাত আবদুল হাই ও নবীন সাহিত্যশ্রেণীতে (অনুর্ধ চল্লিশ বছর বয়স্ক লেখক) নাহিদা নাহিদ। তারা পুরস্কার হিসেবে পাবেন যথাক্রমে পাঁচ লাখ ও এক লাখ টাকা। এছাড়া প্রদান করা হবে ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও সার্টিফিকেট। আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হবে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ১২ নবেম্বর বিকেলে। ছয় দশক ধরে হাসনাত আবদুল হাই লিখছেন। তার লেখায় রয়েছে বৈচিত্র্য। গতানুগতিকতা ও পৌনঃপুনিকতা পরিহার করে নতুনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার গল্প-উপন্যাসে মূর্ত হয়ে ওঠে আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়-আশয়, মানুষের যাপিত জীবন, প্রেম ইত্যাদি। তিনি এ দেশের সাহিত্যে জীবনীভিত্তিক উপন্যাসের ধারার প্রচলন করেছেন। ভ্রমণকাহিনীতে রেখেছেন নিজস্বতার ছাপ। উন্নয়ন অর্থনীতি এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট, নন্দনতত্ত্ব এবং রাজনীতি নিয়েও তিনি লিখেছেন সমান উদ্দীপনায়। হাসনাত আবদুল হাইয়ের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৭ মে, কলকাতায়। বাবা আবুল ফতেহ। মা আয়েশা সিদ্দিকা। পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার সৈয়দাবাদ গ্রামে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে- উপন্যাস : আমার আততায়ী (১৯৮০), তিমি (১৯৮১), মহাপুরুষ (১৯৮৬), সুলতান (১৯৯১), মোরেলগঞ্জ সংবাদ (১৯৯৫), নভেরা (১৯৯৫), বাইরে একজন (১৯৯৫), হাসান ইদানিং (১৯৯৫), সোয়ালো (১৯৯৬), ইন্টারভিউ (১৯৯৭), সিকস্তি (১৯৯৭), লড়াকু পটুয়া (২০১০), পানেছার বানুর নকশীকাঁথা (২০১০)। গল্প : যখন বসন্ত (১৯৭৭), নির্বাচিত গল্প (১৯৭৮), শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৯৩), মরচে পড়া স্টেনগান (২০০৮), বৈশাখে ভার্জিনিয়া উলফ (২০১৪)। কবিতা : কিয়েতো হাইকু; পুলিশ এলে বলব আইডি নেই। ভ্রমণকাহিনী : ট্রাভেলগ (১৯৯২), ট্রাভেলগ/২ (১৯৯৩), সাফারি (১৯৯৪), সানাডু; আন্দালুসিয়া; কলকাতা রানাঘাট (২০১৯)। প্রবন্ধ : পল্লী উন্নয়ন, সবার জন্য নন্দনতত্ত্ব, জাপানের সংস্কৃতি, চলচ্চিত্রের নন্দনতত্ত্ব, নদী। বাংলা সাহিত্যে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে হাসনাত আবদুল হাই পেয়েছেন বহু পুরস্কার। বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৮) এবং একুশে পদক (১৯৯৫) উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পেয়েছেন : জগদীশচন্দ্র বসু পুরস্কার (১৯৯৪), মওলানা আকরম খাঁ পুরস্কার (১৯৯৫), শেরে বাংলা পুরস্কার (১৯৯৫), এস এম সুলতান পুরস্কার (১৯৯৫), শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কার (১৯৯৬)। প্রতিশ্রুতিশীল এক গল্পকার নাহিদা নাহিদ। জন্ম ১৯৮৩ সালের ৫ জানুয়ারি, চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার চরভৈরবী গ্রামে। বাবা আবদুল মজিদ দেওয়ান। মা ইয়ারন নেছা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। তার লেখালেখির সূচনা দৈনিক ভোরের কাগজে প্রকাশিত ‘নারকেল পাতার চশমা’ শিরোনামের ছোটগল্প দিয়ে। প্রথম গল্পগ্রন্থ’ ‘অলকার ফুল’ (২০১৭)। এরপর প্রকাশিত হয়েছে আরও দুটি গল্পগ্রন্থ’-‘যূথচারী আঁধারের গল্প’ (২০১৮) এবং ‘পুরুষপাঠ’ (২০১৯)। নাহিদা নাহিদ ইতোপূর্বে পেয়েছেন ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’। এবার ‘পুরুষপাঠ’ গল্পগ্রন্থে’র জন্য এ পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তিত হয় ২০১৫ সালে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এই পুরস্কার এদেশের প্রবীণ এবং নবীনÑএই দুই শ্রেণীর কথাসাহিত্যিকদেরই অনুপ্রাণিত করবে। ২০১৫ সালে এই দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছিলেন যথাক্রমে শওকত আলী এবং সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। ২০১৬ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক এবং স্বকৃত নোমান। অন্যদিকে ২০১৭ সালে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছিল জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত এবং মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে। ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন রিজিয়া রহমান এবং ফাতিমা রুমি। আর ২০১৯ সালে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল রাবেয়া খাতুন এবং সাদাত হোসাইনকে।
×