ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমন চালের সরকারী মুল্য নিয়ে চালকল মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ৩১ অক্টোবর ২০২০

আমন চালের সরকারী মুল্য নিয়ে চালকল মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার ॥ আসন্ন আমন ধান-চাল সংগ্রহ মৌসুমে সরকার নির্ধারিত চালের মুল্য নিয়ে লাইসেন্সেধারী চালকল মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ চালকল মালিক সরকারের সাথে চুক্তি করতে অনিহা প্রকাশ করছেন। জানা গেছে, গত বোরোর মত আমন মৌসুমেও ধান প্রতি কেজি ২৬টাকা। তবে সিদ্ধ ও আতব চাল এক টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রতি কেজি ৩৭টাকা এবং ৩৬টাকা। গত বোরো মৌসুমে এবং বর্তমানে সিদ্ধ চালের যে উৎপাদন মুল্য পড়ছে তা সরকারি নির্দারিত মুল্যের চেয়ে ৫/৭টাকা বেশী। একারনে চালকল মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদন মুল্য থেকে সরকারি মুল্যে বড় ফারাক থাকার কারনে গত বোরো মৌসুমে সরকার লক্ষমাত্রা পুরণ করতে পারেনি। একই কারনে আসন্ন আমন ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষমাত্রা বোরোর চেয়ে অনেক কম হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বোরো মৌসুমে সরকার নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে হাট-বাজারে ধানের দাম বেশী থাকায় একদিকে কৃষক সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে তেমন একটা আগ্রহী ছিলেন না। অন্য দিকে চালকল মালিকরা বাজার মুল্যে ধান কিনে, চাল উৎপাদন করে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে চাল সরবরাহ করতে গিয়ে প্রতি কেজিতে ৫/৭টাকা লোকসান দিয়েছেন। ফলে এবার তারা সরকারের সাথে চুক্তি করতে অনিহা প্রকাশ করছেন। সান্তাহার চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আহমেদ আলী স্বপন বলেন, শুধু আমি কেন লাইসেন্সধারী সব চালকল মালিকই আমন মৌসুমে সরকারের সাথে চুক্তি করতে আগ্রহী হবেন না। তিনি বলেন গত বোরো মৌসুমে আমার মিলের অনুকুলে বরাদ্দ করা চাল সরকারি গুদামে দিয়ে লোকসান হয়েছে প্রায় ২৬লাখ টাকা। এভাবে প্রতিটি অটোমেটিক, সেমি অটোমেটিক এবং হাস্কিং মালিক যারা চুক্তি করেছিল প্রত্যেকে এমন ভাবে লোকসান দিয়েছেন। প্রতিবার এতো বড় লোকসান দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি প্রশ্নের সুরে বলেন, ইতি মধ্যে হাট-বাজারে আগাম জাতের আমন ধান কিনে উৎপাদন করা চালের প্রতি কেজি পরতা পড়ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা। তাহলে সরকারি গুদামে ৩৭টাকা কেজি চাল কে দেবে। সান্তাহারসহ আদমদীঘি উপজেলা, পাশের দুপচাচিয়া, কাহালু এবং নওগাঁর বন্ধ থাকা প্রায় কয়েক শত হাস্কিং, সেমি অটোমেটিক এবং অটোমেটিক চালকলের বরাদ্দ কিনে সেসব মালিকদের পক্ষে চাল সরবরাহ করে আসা ব্যবসায়ী (নিজের একটি ও ভাড়া করা তিনটি) চালকল মালিক মতিউর রহমান স্বপন, মমতিয়াজুর রহমানসহ বেশ কিছু ব্যবসায়ীও বলেছেন একই কথা। একই কথা বলেছেন আদমদীঘি ও দুপচাচিয়া উপজেলার চালকল মালিকগণ। তাঁরা আরো বলেন, সরকার ৩৭টাকা কেজি মুল্য দিলেও খাদ্য বিভাগের নানা ঘাটে ‘উপরি’ দিতে দিতে প্রতি কেজিতে খরচ হয়ে যাবে কমপক্ষে ২টাকা। আগামী ৭ নবেম্বর থেকে ধান এবং ১৫ নবেম্বর থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হয়ে আগামী বছরের ২৮ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে বলে খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে।
×