ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরে এসেছেন সাড়ে ছয়শ’ বাংলাদেশী ॥ আজ যাচ্ছেন তিন শতাধিক কানাডীয়

প্রকাশিত: ২১:২৩, ১৮ মে ২০২০

ফিরে এসেছেন সাড়ে ছয়শ’ বাংলাদেশী ॥ আজ যাচ্ছেন তিন শতাধিক কানাডীয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুক্তরাষ্ট্রে আটকাপড়াদের বহুল প্রতীক্ষিত ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ২৪৩ বাংলাদেশী। তাদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের বিশেষ ফ্লাইটটি রবিবার ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। একইদিন সন্ধ্যায় কুয়েত ও জাজিরা এয়ারের দুটো পৃথক ফ্লাইটে তিন শতাধিক বাংলাদেশী নাগরিক ঢাকায় ফিরেন। এদিকে আজ সোমবার চতুর্থ দফায় আরও তিন শতাধিক কানাডিয়ান নাগরিক ঢাকা ছাড়ছেন। তাদের মতোই আরও অন্তত দুই সহস্রাধিক বিদেশী নাগরিক ঈদের আগে ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বেবিচক সূত্র জানিয়েছে- বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ-৩৫০-৯০০ এয়ারবাস ওয়াশিংটন সময় রাত ১১টায় যাত্রা শুরু করে। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় ফ্লাইটটি দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ঘণ্টাখানেক টেকনিক্যাল যাত্রা বিরতির পর বিমানটি দোহা স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। যাত্রা বিরতির সময় সকল যাত্রী বিমানের অভ্যন্তরে স্ব-স্ব আসনে অবস্থান করেন। দীর্ঘ এক মাসের চেষ্টা তদ্বিরের পর ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় তাদেরকে ফিরিয়ে আনে বাংলাদেশের শীর্ষ ট্রাভেল সংস্থা গ্যালাক্সি এভিয়েশান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ জানান- যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশীদেরকে দ্রুততম সময়ে খুঁজে বের করে ঢাকায় নিয়ে আসাটা ছিল চ্যালেঞ্জিং। এর আগে এভাবে যুক্তরাষ্ট থেকে বিশেষ ফ্লাইটে উদ্ধার করে নিয়ে আসার কোন নজির বা অভিজ্ঞতা ছিল না আমাদের। আমরা অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি এটাই বড় সফলতা আমাদের। কেননা এখানে কাতার এয়ার শুধু ফ্লাইটটা অপারেট করেছে। বাকি সব দায়িত্বটুকুই পালন করেছে গ্যালাক্সি এভিয়েশান। তিনি জানান- যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রী, ট্যুরিস্ট ও বিজনেস ভিসায় আগত বাংলাদেশের নাগরিক এবং সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এডুকেশন ও কালচারাল কর্মসূচীর অধীনে বাংলাদেশ থেকে আগত ৪৯ জন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ রয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক যাত্রী কোভিড-১৯ উপসর্গবিহীন মেডিক্যাল সার্টিফিকেট প্রদর্শনপূর্বক ফ্লাইটে আরোহণ করেন। ঢাকায় অবতরণের পর প্রত্যেক যাত্রী হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেন। তাদের সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কারোর দেহেই তাপমাত্রা অস্বাভাবিক ধরা পড়েনি। তাই প্রাতিষ্ঠানিকের পরিবর্তে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। এদিকে আজ চতুর্থ দফায় ঢাকা ছাড়ছেন তিন শতাধিক কানাডিয়ান নাগরিক। রবিবার ঢাকায় অবস্থিত দেশটির দূতাবাস জানায়, আজ (সোমবার) ১৮ মে চতুর্থ দফায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইট কানাডার টরেন্টোর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এই ফ্লাইটের তিন শ’ জনের বেশি নাগরিককে দেশে ফেরান হবে। এরপর শেষ দফায় নাগরিকদের নিয়ে আরও একটি বিশেষ ফ্লাইট কানাডা যাবে। তবে শেষ ফ্লাইটের তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ১০ মে তৃতীয় দফায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে কানাডার ৩৪০ নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করেন। এর আগে আরও দুই দফায় কানাডার নাগরিকরা বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়েছেন। প্রথম দফায় ২১৪ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫৭ জন কানাডিয়ান নাগরিক ঢাকা ছাড়েন। কানাডার নাগরিকদের নিজ দেশে পৌঁছাতে সহায়তা করায় বাংলাদেশ সরকার ও কাতার এয়ারওয়েজকে ধন্যবাদ জানান ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়েট প্রিফন্টেইন। জানা গেছে- ঈদের আগেই আরও অন্তত দুই সহস্রাধিক বিদেশী নাগরিকের ঢাকা ত্যাগের প্রস্তুতি চলছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ভারত ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর। তারা সবাই স্পেশাল ফ্লাইট সংগ্রহ করেছেন। গত ৮ মার্চ দেশে করোনা শনাক্ত হবার পর থেকেই বিদেশীরা ঢাকা ছাড়ার উদ্যোগ নেয়।
×