ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সেলুলয়েডে কীর্তিমানদের জীবনের গল্প

প্রকাশিত: ২২:৪২, ১৩ মে ২০২০

সেলুলয়েডে কীর্তিমানদের জীবনের গল্প

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে কিছু মানুষ দেশের জন্য এবং দেশের সংস্কৃতির জন্য কাজ করেছেন তাদের একজন সালাউদ্দিন জাকীÑএভাবেই অগ্রজ নির্মাতার মূল্যায়ন করেছেন অভিনয় শিল্পী রাইসুল ইসলাম আসাদ। চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফের মূল্যায়নটি এমনÑআমার কৈশোর এবং যৌবনের প্রারম্ভিক সময়ে যে কয়জন মানুষ আমাকে প্রভাবিত করেছে তাদের মধ্যে সালাউদ্দিন জাকী অন্যতম এবং প্রধান ব্যক্তিত্ব। এক অর্থে বলতে গেলে আমরা যখন চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখছি তখন আমাদের স্বপ্নের নায়ক ছিলেন সালাউদ্দিন জাকীÑএমন মূল্যায়ন করেছেন আরেক নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম। শুধুই অন্যদের মূল্যায়নে নয়, সেলুলয়েডে নিজ কথনে উঠে এসেছে চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীর বর্ণাঢ্য জীবনের কথা। উঠে এসেছে ঘুড্ডি ছবির প্রখ্যাত এই নির্মাতার শৈশব-কৈশোর থেকে বেড়ে ওঠার বয়ান। গল্পচ্ছলে বলেছেন কিভাবে ঝুঁকলেন শিল্পের পথে। তার মতোই এমন বাইশ কীর্তিমানের জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র। জীবনীনির্ভর সেসব তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে তাদের জীবনের জানা-অজানা নানা অধ্যায়। তথ্যচিত্রগুলো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করা বিশিষ্টজনদের নিয়ে নির্মিত ভিডিওচিত্রের সেই তালিকায় আছেন কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বাউল, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা। কীর্তিমানদের নিয়ে নির্মিত এসব প্রামাণ্যচিত্রের অনেকগুলোই ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে শিল্পকলা একাডেমির ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুকে। করোনাকালে যখন থেমে গেছে টিভি নাটক থেকে সিনেমা নির্মাণকেন্দ্রিক সব ধরনের বিনোদনের অনুষঙ্গ, তখন অনেকেই আগ্রহ নিয়ে দেখছেন বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের বায়োপিকনির্ভর তথ্যচিত্রগুলো। ইতোমধ্যে শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, ছায়ানট সভাপতি সঙ্গীতজ্ঞ সন্্জীদা খাতুন, চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী, বাউল ফকির নহির শাহ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জীবনীনির্ভর ডকুমেন্টারিগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে চিত্রশিল্পী ও ভাষাসংগ্রামী মুর্তজা বশীর, কবি নির্মলেন্দু গুণ, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম ও চিত্রশিল্পী হাশেম খানকে নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রগুলো। করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগকালে পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে প্রামাণ্যচিত্রগুলো। দুই বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্মিত হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্রগুলো। এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মসূূচীর সমন্বয়ক মাসউদ সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের শিল্প-সাহিত্য ও শিক্ষাঙ্গনে অবদান রাখা বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বাইশজন কীর্তিমান মানুষের জীবনী মেলে ধরা হয়েছে বায়োপিকধর্মী ডকুমেন্টারিগুলোয়। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্রগুলো। ইতোমধ্যে ১৮টি প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চারটি তথ্যচিত্রের সম্পাদনার শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। করোনার এই দুঃসময়ে পর্যায়ক্রমে ডকুমেন্টারিগুলো প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচীর আওতায় আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের জীবনীনির্ভর তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে সেই তালিকা করা হচ্ছে।
×