নিম্নআয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ান ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নোভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সঙ্কটে দৈনিক উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল খেটে খাওয়া দিনমজুর-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে দেশের ধনী ও বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী ও বিশেষ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবার ধানম-িস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিশ্বের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে সমাজের ধনী ও বিত্তবানদের প্রতি আমাদের চারপাশে খেটে খাওয়া দিন-মজুর মানুষের সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আর মতলববাজ, গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে প্রশাসনকে অবহিত করুন। বিশেষ ব্যবস্থায় এ সংবাদ সম্মেলনে শুধুমাত্র বাংলাদেশ টেলিভিশন তা ধারণ করে সম্প্রচার করে, গণমাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এ সকল দরিদ্র জনগণের কষ্ট লাঘবের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ব্যবস্থা চালু করেছেন এবং তাদের সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী ও বিশেষ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মারাত্মক ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে সারাবিশ্বে কোটি কোটি মানুষ গৃহবন্দী রয়েছে। জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তা হুমকির পাশাপাশি দরিদ্র ও সীমিত আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাসও এসেছে। তিনি বলেন, ধনী-গরিব, উন্নত-উন্নয়নশীল সকল জাতিরাষ্ট্র পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য একে অপরের সাহায্য সহযোগিতা গ্রহণ করছে। তাই আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের গৃহীত কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, মানব সভ্যতা আজ সঙ্কটের মুখোমুখি। সারাবিশ্ব আজ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত। প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। পরম করুনাময়ের অসীম কৃপায় বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিবিড়ভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন এবং সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। জনগণকে রক্ষার জন্য সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করে চলেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশে বিদ্যমান স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র থেকেও সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও চীন বাংলাদেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সামগ্রী বিশেষ বিমানযোগে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চীন থেকে আরও চিকিৎসা সামগ্রী বাংলাদেশে পৌঁছাবে। আমরা বাংলাদেশের চিকিৎসক-নার্স ও জনগণ সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করে চলেছেন। দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা আতঙ্কিত হবেন না। ধৈর্য, দায়িত্বশীলতা ও দেশপ্রেম নিয়ে একযোগে সবাইকে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। ঘরে ঘরে সচেতনতা ও সতর্কতার দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।’ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোন ধরনের গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি জনগণের প্রতি আহ্বান রাখছি, আপনারা কোন প্রকার গুজবে কান দেবেন না। সঠিক তথ্যের জন্য প্রচলিত গণমাধ্যম তথা টেলিভিশন-রেডিও-সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচারিত সরকারী নির্দেশনা মেনে চলুন।’ তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে সরকার নির্দেশিত হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করুন। মতলববাজ, গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে প্রশাসনকে অবহিত করুন। এই ধরনের গুজব শুধুমাত্র আমাদের সঙ্কটকে আরও ঘনীভূত করবে। আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সক্ষম হবো। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।