ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে ৭৭ পাউন্ডের কেক কেটে রাষ্ট্রপতির জন্মদিন পালন

প্রকাশিত: ১১:০২, ২ জানুয়ারি ২০২০

কিশোরগঞ্জে ৭৭ পাউন্ডের কেক কেটে রাষ্ট্রপতির জন্মদিন পালন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১ জানুয়ারি ॥ কিশোরগঞ্জে নানা আনুষ্ঠানিকতায় রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের ৭৭তম জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে জেলার করিমগঞ্জে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় ৭৭ পাউন্ডের বিশাল এক কেক কেটে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ আ ন ম নৌশাদ খানের সভাপতিত্বে এতে জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান, এডিসি (সার্বিক) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জিপি বিজয় শঙ্কর রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি শাহ আজিজুল হক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ আসাদ উল্লাহ, জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন রুবেল, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহজাহান, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি সালমা হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বক্তারা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও করিমগঞ্জের ইউএনও শারমিন সুলতানা, থানার ওসি মমিনুল হকসহ কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে কিশোরগঞ্জে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ৭৭তম জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের টানা দুইবারের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা সদরের কামালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম হাজি মোঃ তায়েব উদ্দিন ছিলেন একজন কৃষক এবং মাতা মরহুমা তমিজা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। স্থানীয় বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ১৯৬১ সালে তিনি নিকলী জিসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রী অর্জনের পর আইন পেশায় কিশোরগঞ্জ বারে যোগদান করেন। ছাত্রাবস্থায় ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার মাধ্যমে আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে গুরুদয়াল কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। ফলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করে। ১৯৬৩ সালে তিনি গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৫ সালে একই কলেজের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের পর ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি কারাবন্দী ছিলেন। এরপর থেকে ২০০১ সালে স্পীকার নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি একটানা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মোঃ আবদুল হামিদ মাত্র ২৬ বছর বয়সে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং ভারতের মেঘালয় রিক্রুটিং ক্যাম্পে এবং তৎকালীন সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (মুজিব বাহিনী) সাবসেক্টরের কমান্ডার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৩ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-৪ (সাবেক কিশোরগঞ্জ-৫) আসন থেকে ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম এবং ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
×