ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম আবাহনী গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে

প্রকাশিত: ১০:৫১, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

  চট্টগ্রাম আবাহনী  গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে

জাহিদুল আলম জয়, চট্টগ্রাম থেকে ॥ টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। তাইতো ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে কলকাতার মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাবের বিরুদ্ধে সেরা একাদশের ছয়জন পরিবর্তন করে অনেকটা ‘অচেনা একাদশ’ মাঠে নামিয়ে দেন স্বাগতিক দলের কোচ মারুফুল হক। তার মাশুলও দিতে হয়েছে। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলে প্রথম হারের স্বাদ পেয়েছে ২০১৫ আসরের চ্যাম্পিয়নরা। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে স্বাগতিক দলকে ১-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে মোহনবাগান। জোশে এ্যান্টোনিও ভিচুনার দল দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে অনেকটা অসাধ্য সাধন করেছে। মোহনবাগানের এই জয়ে কপাল পুড়েছে লাওসের ক্লাব ইয়ং এলিফ্যান্টের। এই ম্যাচটির আগে তারা ২-১ গোলে হারায় মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে। ফলে গ্রুপে তিনটি করে ম্যাচ শেষে তিন দলেরই ভান্ডারে জমা হয় ৬ পয়েন্ট করে। কিন্তু গোলগড়ে এগিয়ে থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। আর রানার্সআপ হয়েছে মোহনবাগান। ফলে এই দুই দল আসরের সেমির টিকেট পেয়েছে। আর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়ে গড়া ইয়ং এলিফ্যান্টকে আপসোস সঙ্গী করে দেশের বিমান ধরতে হয়েছে। চট্টগ্রাম আবাহনী-মোহনবাগান ম্যাচে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দর্শকে ভরপুর। ৩০ হাজার আসনবিশিষ্ট গ্যালারি প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। স্বাগতিক দর্শকরা মোহনবাগানের ফুটবলারদের উদ্দেশে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তৃপ্তির হাসি নিয়েই মাঠ ছেড়েছে কলকাতার জায়ান্টরা। ইয়ং এলিফ্যান্টের বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচের একাদশের মাত্র পাঁচজন এই ম্যাচে সেরা একাদশে জায়গা পান। গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল, নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার চিনেদি ম্যাথুউ থেকে শুরু করে অধিনায়ক জামাল ভুইয়াকেও বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন বন্দর নগরীর দলের কোচ মারুফুল হক। প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পাওয়ায় সেমিফাইনাল সামনে রেখে বেঞ্চের খেলোয়াড়দের ঝালিয়ে নিতেই পরিবর্তনগুলো করেন আবাহনী কোচ। কিন্তু কৌশলটি তার মোটেও কাজে লাগেনি। সেরা তারকাদের বিশ্রাম দেয়ার সুযোগে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীর ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে কলকাতা মোহনবাগান। প্রথমার্ধে বলের দখলও বেশি থাকে ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির। ছয়টি কর্ণারও আদায় করে নেয় এ অর্ধে। কিন্তু কাজের কাজ গোল আদায় করতে পারেননি জুলেন, দেবজিত, ড্যানিয়েলারা। কোচ মারুফুল হকের শিষ্যরাও বেশ কয়েকটি ভাল সুযোগ পান। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি দিদিয়ের, ইয়াসিন আরাফাত, কাউসার রাব্বিরা। বিরতির পর দু’দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। তবে প্রথমার্ধের মতো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে থাকে অতিথিরা। ম্যাচের ৬০ মিনিটে ফলও পায় তারা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে ডি বক্সের মধ্য থেকে আবাহনীর জাল কাপান মোহানবাগানের ফরোয়ার্ড সুহাইর ভাদাকেপিদিকা (১-০)। গোলটি হজমের পরই আবাহনী কোচ মারুফুল হক মাঠে নামান দারুণ ফর্মে থাকা নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার চিনেদি ম্যাথুউকে। দুই মিনিট পর অধিনায়ক জামাল ভুইয়াকেও মাঠে নামান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে দু’দলের ফুটবলাররা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে দারুণ সংঘবদ্ধ আক্রমণে লোপ্পা সুযোগ নষ্ট করেন আবাহনীর মন্টেনিগ্রোর ফরোয়ার্ড রটকোভিচ লুকা। ৭৬ মিনিটে অমার্জনীয় মিস করেন আবাহনী ফরোয়ার্ড সোহেল রানা। এ সময় প্রায় মাঝমাঠ থেকে বদলি চিনেদু মোহনবাগানের কয়েকজনকে ফুটবলারকে কাটিয়ে ডি বক্সে ফাকায় বল বাড়িয়ে দেন। কিন্তু সোহেল রানা বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতার পরপরই তাকে মাঠ থেকে তুলে নেন আবাহনী কোচ মারুফুল। মাঠে নামেন মিডফিল্ডার আরিফুল ইসলাম। ম্যাচের ৮১ মিনিটে আবারও সুযোগ নষ্ট হয় চট্টলা আবাহনীর। জামালের বাড়ানো বলে লুকার নেয়া জোরালো শট মোহনবাগানের একজন ডিফেন্ডার কর্ণারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করায় শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় চট্টগ্রাম আবাহনীকে।
×