ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীদের বড় হামলার এটা হতে পারে ‘টেস্ট কেস’

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 জঙ্গীদের বড় হামলার এটা হতে পারে  ‘টেস্ট কেস’

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকা সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পুলিশের ওপর হাতবোমা হামলার ঘটনাকে ছোট করে দেখা ঠিক হবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা জঙ্গীদের বড় ধরনের হামলার ‘টেস্ট কেস’ হতে পারে। প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা হলেও পরবর্তীতে বড় ধরনের হামলা হতে পারে। অসমে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নাগরিকত্ব বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। এ ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। রবিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন। বোমা হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা (হামলাকারী) ছোটখাটো ঘটনা দিয়ে বড় ধরনের হামলার টেস্ট কেস ঘটাতে পারে। পুলিশের ওপর তিন/চারটি হামলার সিস্টেমকে পরবর্তীতে বড় ধরনের হামলার ঘটনার টেস্ট কেস হিসেবে নিতে পারে। তবে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের তৎপরতা বেড়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, টার্গেট নিঃসন্দেহে পুলিশ। হতে পারে এটা ছোটখাটো ঘটনা দিয়ে টেস্ট কেস করতে চাচ্ছে, বড় ধরনের কোন হামলা করার জন্য, তার পূর্বপ্রস্তুতিও হতে পারে। এ হামলা রাজনীতিবিদদের ওপর হুমকি কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, পুলিশের আইজি ও কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নিশ্চিত করেছেন, মন্ত্রী এখানে টার্গেট ছিল না। এ ধরনের ছোট ছোট ঘটনার মাধ্যমে অর্থাৎ এখন পুলিশ টার্গেট, পরবর্তীতে মন্ত্রী-এমপিরা টার্গেট হবে না, এমন তো নয়, হতেও তো পারে। জঙ্গী তৎপরতা এখনও রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তা তো অবশ্যই আছে। দুর্বল হয়েছে, কিন্তু নিষ্ক্রিয় হয়েছে এটা মনে করার কারণ নেই। এটা এখন পৃথিবীর সব দেশেই ঘটছে এ ঘটনা। তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছে বড় ধরনের হামলার জন্য, আমার কাছে মনে হয়। পুলিশের ওপর তিন/চারটি হামলা টেস্ট কেস হিসেবে নিতে পারে পরবর্তীতে বড় ধরনের হামলা করার জন্য। তিনি বলেন, গোয়েন্দাদের কাছ থেকে জানা গেছে, এটি একটি রিমোট কন্ট্রোল হামলা। বিষয়টি গোয়েন্দারা দেখছেন, তদন্ত চলছে। পুলিশের তৎপরতাও বেড়েছে। আর আমাদের দেশে জঙ্গীরা হলি আর্টিজান, শোলাকিয়ায় হামলার পর আরও কিছু বিদেশীর ওপর হামলা হয়েছে। ‘বোমা হামলার ঘটনার কথিত আইএস দায় শিকার করেছে’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইএস (ইসলামিক স্টেস) আছে কিনা বা এগুলো আইএসের নাম দিয়ে অপপ্রচার কিনা, তা দেখা দরকার। চূড়ান্ত প্রতিবেদন না পেলে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। কারা এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। জঙ্গী চক্রটি কথিত ইসলামিক স্টেটের নাম ব্যবহার করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সায়েন্সল্যাবের হামলায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী টার্গেট ছিলেন কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আমাকে জানিয়েছেন, শনিবারের ঘটনায় মন্ত্রী টার্গেট ছিলেন না। জঙ্গীরা এর আগেও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তাদের হামলার টার্গেট মন্ত্রী ছিল না। তিনি বলেন, এর আগে মালিবাগ, গুলিস্তান, খেজুরবাগানে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গী দমনে আমাদের পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের ট্র্যাক রেকর্ড কিন্তু ভাল। তিনি বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা জঙ্গী দমন ও নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সফলতার পরিচয় দিয়েছে। আশা করি এ বিষয়টিও তারা অচিরেই তদন্ত করে বের করতে সক্ষম হবেন। এখন আইএসের নামে অপপ্রচার চলছে, সেটাও ভেবে দেখার বিষয় আছে। বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলছি না। বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মোটরযান আইন বলে কোন আইন নেই, এ আইনের নামে গুজব রটানো হচ্ছে, বলা হচ্ছে যে, বিভিন্ন বিষয়ে জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে, এটা আসলে সড়ক পরিবহন আইন। বাস্তবে এটি গুজব। আর আইএসের নামেও অপপ্রচার চলছে কি না, তা নিশ্চিত না হয়ে বলতে পারছি না। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের জাতীয় সম্মেলন অক্টোবরেই হওয়ার কথা। নিয়মানুযায়ী তিন বছরে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। অক্টোবরে এখনও ঠিক আছে। আমরা তো পরিবর্তন করিনি। পরিবর্তন করলে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ডেকে তা করার বিষয় আসবে। সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সম্মেলন হবে না এ মুহূর্তে বলা যাবে না। আমরা এক মাসের নোটিস দিয়েও জাতীয় সম্মেলন অতীতে করেছি। তবে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, এত বছরে বিএনপিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির শুভ কামনা করি। তবে বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে ইতিবাচক রাজনীতিকে আলিঙ্গন করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
×