ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বারো আউলিয়া দুধের কারখানায় অভিযান, ১২ জনকে কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৮ আগস্ট ২০১৯

বারো আউলিয়া দুধের কারখানায় অভিযান, ১২ জনকে কারাদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক ফোটা দুধের ছিটা নেই। শুধু পানি কেমিক্যাল আর দুধের ফ্লেভার। তাতেই বাজারের সেরা দুধ। আবার নামও দিয়েছে ‘বারো আউলিয়া দুধ’। গত দশ বছর ধরেই এ দুধ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আলহাজ আক্কাস আলী। কিন্তু বুধবার যখন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সেখানে হানা দেন তখন দৌড়ে পালিয়েছেন বারো আউলিয়ার ‘বড় কুতুব আক্কাস আলী’। আর লোকজন চিৎকার করতে থাকে-এবার দেউলিয়া- বারো আউলিয়া। ম্যাজিস্ট্রেট জব্দ করেন বিপুল পরিমাণ দুধের মজুদ। জব্দ করেন দুধ প্রস্তুত প্রণালীর সব উপকরণ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করা হয়। জরিমানা করা হয় ৫৮ লাখ টাকা। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে। জানা গেছে, বারো আউলিয়ার মালিক আলহাজ আক্কাস আলী হচ্ছেন ঢাকার কিশোরগঞ্জ সমিতির সভাপতি। তিনি নিজেকে অন্যতম সমাজসেবক হিসেবে জাহির করেন। দান খয়রাত করে মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার করেন। তার কীর্তিকলাপ দেখে ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার নিজেও লজ্জায় পড়ে যান। কারণ তিনিও কিশোরগঞ্জ সমিতির অন্যতম নীতিনির্ধারক। তবুও ন্যায়নিষ্ঠ সততা ও নৈতিকতার বিচারবোধ থেকে মন্তব্য করতে বাধ্য হন ‘মান সম্মান আর কিছুই রইল না।’ কিশোরগঞ্জের মানুষ যে এত খারাপ তা আগে জানা ছিলনা। মুখ দেখানোর আর উপায় কি? তিনি জানান, বারো আউলিয়ার মালিকের ছেলে আবুল কালাম আজাদ শাহীনসহ ১২ জনকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জনকে দুই বছর বাকিদেরকে এক বছরের। রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় সেখানে মালামাল জব্দ তালিকা তৈরির কাজ চলছিল। তার মধ্যে রয়েছে পন্ডার স্ক্রিন ক্রিম, রেকুভাম, ফেয়ার সোডিয়াম ও স্পেশাল ওয়াটার। সারওয়ার আলম জানান, এগুলো দিয়েই শিশুদের জন্য তৈরি করা হতো বিশেষ দুধ। সারাদেশে বাজারজাত করা হতো। হাইকোর্ট সম্প্রতি যে কয়টা ব্র্যান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বারো আউলিয়া তার অন্যতম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও এ দুধের বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। তারপরও এখানকার দুধ বিক্রি বন্ধ রাখা হয়নি। এ কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে।
×