ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কলেজছাত্রের বিদ্যুত সাশ্রয়ী দূষণমুক্ত এসি উদ্ভাবন

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২৯ জুন ২০১৯

কলেজছাত্রের বিদ্যুত সাশ্রয়ী দূষণমুক্ত এসি উদ্ভাবন

বিদ্যুত সাশ্রয়ী দূষণমুক্ত পরিবেশবান্ধব এয়ার কন্ডিশনার (এসি) উদ্ভাবন করেছেন শরীফুল ইসলাম নামে এক কলেজ ছাত্র। শরীফ এই যন্ত্রের নাম দিয়েছেন ‘শরীফ পিউর কুলিং টেকনোলজি’। সংক্ষেপে এর নাম রেখেছেন এসপিসিটি। গত ২২ জুন মির্জাপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) পরীক্ষামূলক কার্যকারিতা তুলে ধরেন। পিউর কুলিং যন্ত্রটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিদ্যুত সাশ্রয়ী ঠা-াকরণ যন্ত্র বলে দাবি করেন শরীফ। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ একাব্বর হোসেন এমপি উপস্থিত ছিলেন। শরীফুল ইসলাম মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের চান্দুলিয়া গ্রামের ছোরত আলীর ছেলে। তিনি করটিয়া সরকারী সা’দত কলেজ থেকে গণিত বিভাগে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। শরীফ তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে চতুর্থ। শরীফুল জানান, তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিদ্যুত সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব ও দূষণমুক্ত যা ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (সিএফসি) গ্যাস ছাড়াই ঠান্ডাকরণ প্রক্রিয়ায় কাজ করবে। এর জন্য তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘শরীফ পিউর কুলিং টেকনোলজি’ (এসপিসিটি)। তিনি দাবি করেন, বর্তমান বাজারে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সিএফসি গ্যাস ব্যবহার করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রসহ বিভিন্ন ঠান্ডাকরণ যন্ত্র তৈরি করা হয়, যা বায়ুম-লের ওজোন স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এভাবে চলতে থাকলে সূর্যের রশ্মি পৃথিবীতে চলে আসবে। এতে ক্যান্সারসহ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পাবে, ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ বাড়বে এবং চোখে অসময়ে ছানি পড়বে। প্রাণী ও উদ্ভিদের অস্তিত্ব হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এসব থেকে বাঁচাতে এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করেছেন শরীফুল জামান। শরীফুল বলেন, বর্তমানে ১টন এসিতে যেখানে ১ হাজার ৫০০ ওয়াটের বেশি বিদ্যুত প্রয়োজন, সেখানে তার উদ্ভাবিত যন্ত্রে প্রায় ৯০ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয় করবে। বিদ্যুত লাগবে মাত্র ১০০ থেকে ১২০ ওয়াট। ১২ ভোল্টের ডিসি বিদ্যুতের মাধ্যমে যন্ত্রটি কোন সিএফসি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। এই প্রক্রিয়ায় খুব স্বল্প পরিমাণে তাপ নির্গত হবে। শরীফ বলেন, গত ২০১৬ সাল থেকে এ উদ্ভাবনী নিয়ে কাজ শুরু করেন। ২০১৭ সালের শেষের দিক পর্যন্ত পরপর তিনবার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। ২০১৮ সালে তিনি সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি তার উদ্ভাবনী প্রযুক্তি মেধাস্বত্ব চুরি হয়ে যেতে পারে জানিয়ে স্থানীয় এমপি একাব্বর হোসেনের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া তুলে ধরতে চান। এর আগে শরীফুল আট বছর গবেষণা করে শরীফুয়েলেস নামে জ্বালানিবিহীন স্বয়ংক্রিয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের দাবি করেন। এই গবেষণাটি ব্যয়বহুল হওয়ায় তা থেকে তিনি পিছিয়ে আসেন। এই গবেষণা কাজে পিতার জমিজমা বিক্রি ছাড়াও অনেক টাকাপয়সা খুইয়েছেন বলে জানা গেছে। -Ñনিরঞ্জন পাল, মির্জাপুর থেকে
×