ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গফরগাঁও-ময়মনসিংহ সড়ক মরণফাঁদ ॥ চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৯:২১, ৩০ মে ২০১৯

 গফরগাঁও-ময়মনসিংহ  সড়ক মরণফাঁদ ॥  চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও ২৯ মে ॥ সংস্কার ও মেরামতের অভাবে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে ময়মনসিংহ সদর পর্যন্ত ৬৯ কিলোমিটার সড়কের ৪৩ কিলোমিটার রাস্তা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ৫ বছরেরও বেশি সময় সড়কটি সংস্কার ও মেরামতের কোন উদ্যোগেই গ্রহণ করছে না সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ফলে এটি দিয়ে চলাচলের অনপযোগী হয়ে পড়েছে যানবাহন ও এলাকাবাসী। স্থানীয় এমপি সংসদে বার বার সংস্কারের দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জানা যায়, ২০০৯সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একবার এই সড়কের সংস্কার হয়েছিল। তাও লোক দেখানো। গত ১২ বছরেও এ সড়কের কোন উন্নয়নের ছোঁয়া বা সংস্কারের আওতায় আসেনি। ময়মনসিংহ-টোক সড়কের ৪৩ কিলোমিটার রাস্তার গফরগাঁও, গলাকাটা বাজার, ধলা, হাসপাতাল রোড, কালিরবাজারসহ অন্তত ৩১টি স্থানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত ১৭-১৮ অর্থবছরে গফরগাঁও-ময়মনসিংহ সড়কের পাট গোদাম থেকে গলাকাটা বাজার পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটারের টেন্ডার হলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাতিল হয়ে য়ায়। পরে আবার ১৮-১৯ অর্থবছরে ময়মনসিংহ বিভাগের সড়ক ভবনের ১৩টি প্যাকেজের মধ্যে ৫শ’ ৪৩ কোটি টাকা কাজের একটি প্যাকেজ গফরগাঁও-ময়মনসিংহ-টোক সড়ক। যার কার্যাদেশ পেলেও কাজ শুরু করতে পারেনি ময়মনসিংহ সড়ক ভবন। ১শ’ ৪৩ কোটি টাকা গফরগাঁও-ময়মনসিংহ সড়কের কাজ ঈদের আগে শুরু করতে পারবে না বলে মনে করছে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুদ খান। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত গফরগাঁও উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী গোলাম রব্বানী বলেন, এটি সড়ক নয়, যেন মানুষের মরণফাঁ। এই সড়ক দিয়ে চলাচলের চেয়ে নিজে নিজে হাত-পা ভেঙ্গে ঘরে বসে থাকা উচিত। গফরগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ হারেজ মিয়া বলেন, গত ১২ বছরে এই সড়কের উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। কত বছর গেলে আমরা উন্নয়নের মুখ দেখতে পারব। ১৯৯৬সালে আলতাফ গোলন্দাজ এমপি থাকার সময় এই সড়কের কাজ হয়েছিল। এর পর থেকে আশা, শুধুই আশা। উপজেলার শ্রমিক পরিবহন নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ গফরগাঁও, নান্দাইল, ত্রিশাল, হোসেনপুর, পাকুইন্দা, ঈশ্বরগঞ্জসহ সিলেট-ভৈরবও যাতায়াত করছে কিন্তু এই সড়কটি সংস্কার ও মেরামত না করার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। ঈদের আগে সংস্কার বা মেরামত না হলে পরিবহন খাতে ধস নামবে। সাধারণ যাত্রীরা পড়বে দুর্ভোগে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী এক কর্মকর্তা জানান, আমরা আসি কাজ করতে, কিস্তু কাজ করতে পারি না এলাকার কিছু লোকের চাঁদাবাজির কারণে। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, গফরগাঁও-ময়মনসিংহ সড়কের ৪৩ কিলোমিটার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে কাজ শুরু করতে না পারলেও জুনের পরে সড়কটি ঠিক হবে, আশা করছি। তিনি আরও বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যেসব জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়েছে সেগুলোর সংস্কারের কাজ সাময়িকভাবে করে যাচ্ছি। এতে অর্থের অপচয় হলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা সস্তি হবে।
×