ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লেখাপড়া শেষে চাকরি খুঁজলে চলবে না, উদ্যোক্তা হতে হবে

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ৪ মে ২০১৯

 লেখাপড়া শেষে চাকরি খুঁজলে চলবে না, উদ্যোক্তা হতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, লেখাপড়া শেষে চাকরি খুঁজলে হবে না, তোমাদের উদ্যোক্তা হতে হবে। তোমরা অন্যের জন্য কাজ তৈরি করে দেবে। শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০১৯ এর পুরস্কার বিতরণ এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০১৬ ও ২০১৭ এর কৃতী ক্রীড়াবিদদের ব্লেজার ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সুযোগ্য নেতৃত্বে এটি অনেক অগ্রসর হয়েছে। অনেক সমস্যা থেকে উতরে উঠেছে এই বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি। বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন শিক্ষার মানের দিকে নজর দিচ্ছে। শিক্ষার মানোন্নয়নের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মান নিশ্চিত করতে এখন কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন শুধু ডিগ্রীর জন্য কলেজে না আসে। তারা যেন সত্যিকার অর্থে শিক্ষাগ্রহণ করে সুনাগরিক হতে পারে, তারা যেন স্বাবলম্বী হয়। যোগ্য নেতৃত্ব যেন উঠে আসে সেই শিক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। ডাঃ দীপু মনি বলেন, শিক্ষার মান আমরা টের পাই যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেই। আমি চাঁদপুরে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন শিক্ষক নিয়োগের সময় দেখেছি সনদে খুব ভাল ফল। কিন্তু প্রশ্ন করলে তারা পারছেন না। তাই আমি বলব শুধু জিপিএ এবং ভাল ফল নয়, সত্যিকার অর্থে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। যোগ্য, দক্ষ এবং সুনাগরিক হিসেবে তৈরি হতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সারাদেশে যে ২৮ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের গুণগত শিক্ষা দেয়ার জন্য বর্তমান যে নেতৃত্ব আছেন তারা যথেষ্ট বলে আমি মনে করি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেন। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে সেই সমালোচনার জবাব। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৮ লাখ শিক্ষার্থী, যা বিশ্বের অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। এটিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়ন করে গতিশীল নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। আমি দেখেছি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সবচেয়ে বেশি ভিজিটেড। এটির আয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির স্কিম চালু করা যেতে পারে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বোর্ড বাজারে অবস্থিত এক টুকরো ভূ-খন্ড নয়। এটি বাংলাদেশের মানচিত্র। দেশজুড়ে এর পরিসর। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ বছরের ইতিহাসে আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আর কখনও হয়নি। এটিই প্রথম। শুধু এটি নয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন আমরা করেছি। প্রথম শিক্ষা সমাবেশ হয়েছে। কলেজ র‌্যাঙ্কিং করেছি। এছাড়া বেসরকারী কলেজের মধ্যে মডেল কলেজ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মশিউর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান শেষে আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীদের মধ্যে সনদ, ব্লেজার ও পুরস্কার বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এই পর্বে ছেলেমেয়ে উভয় গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খুলনা ব্রজলাল (বিএল) কলেজ। ছেলেদের গ্রুপে রানার্সআপ হয়েছে খুলনার খান জাহান আলী ডিগ্রী কলেজ। আর মেয়েদের গ্রুপে সরকারী সিলেট মহিলা কলেজ রানার্সআপ হয়েছে।
×